জীবনের নতুন অধ্যায়ে শোভন-বৈশাখী।
এক ছাদের নীচে থিতু হয়েছেন ঢের আগেই। তবে ‘যুগল’ হিসেবে একসঙ্গে যাত্রা শুরু করলেন এত দিনে। শুধু জীবন নয়, নিজের নামের সঙ্গেও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে জুড়ে নিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। ফেসবুক প্রোফাইলে ‘বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়’ থেকে ‘বৈশাখী শোভন বন্দ্যোপাধ্যায়’ হলেন তিনি। সেটাই তাঁর নিজের এবং নিজেদের নতুন পরিচয়। বাস্তবে শোভনের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিবাহবিচ্ছেদের মামলা এখনও চলছে। তাই শোভনকে নিয়ে নতুন যাত্রার সূচনা নেটমাধ্যমেই করেছেন বৈশাখী। বুধবার ভোররাতে ফেসবুকে নিজের নামের সঙ্গে শোভনের নাম জুড়ে নেন তিনি। প্রোফাইল পিকচারে লেখেন, ‘আমি থেকে আমাদের যাত্রা শুরু হল।’
রাজনীতির সঙ্গে জড়িত লোকজনের একাংশ বলছে, এ হল ‘খবরে থাকার অপচেষ্টা’। আবার অন্য একাংশের মতে, এ হল ‘প্রেম ও বন্ধুত্বের প্রকাশ’। রসিকজনেরা বলছেন, ‘‘হাজার হোক, বুধবার জামাইষষ্ঠী। শোভনের সঙ্গে নিজের নাম জুড়ে নেওয়ার এর চেয়ে ভাল দিন আর হতে পারত না। যা হয়েছে, ভালই হয়েছে।’’
মতামত যা-ই হোক না কেন, এটা ঘটনা যে, নিজেদের বন্ধুত্বকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন বৈশাখী। তবে তাঁর পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা শুরু হতেই নেটমাধ্যমে নাম পরিবর্তনের ব্যাখ্যা দেন বৈশাখী। তিনি লেখেন, ‘আমাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের নাম বৈশাখী শোভন ব্যানার্জি। আমি থেকে আমরার এই যাত্রা ভার্চুয়াল দুনিয়ার জন্যই’।
একদা তৃণমূলে ক্ষমতাশালী হলেও শোভন-বৈশাখী বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু বিধানসভা ভোটের আগেই বিজেপি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন তাঁরা। ভোট মেটার পর এখন তাঁদের তৃণমূলে ফেরা নিয়ে জল্পনা চলছে। তা আরও জোরাল হয়েছে সম্প্রতি তাঁরা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে যাওয়ায়। পার্থর বাড়ি থেকে বেরিয়ে বৈশাখী-শোভন যা বলেছেন, তা-ও যথেষ্ট ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
ইতিমধ্যেই সম্প্রতি নতুন ভূমিকায় নেটমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে তাঁদের। যেখানে বৈশাখী সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন শোভনের। যেখানে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান তো বটেই, ব্যক্তিগত জীবনের খুঁটিনাটিও তথ্যও মেলে ধরছেন সাধারণ মানুষের সামনে।
ঘটনাচক্রে, জনসমক্ষে শোভন-বৈশাখীর সম্পর্কের উত্তরণও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিছু দিন আগে পর্যন্ত নিজেদের সম্পর্ককে ‘বন্ধুত্ব’ বলেই ব্যাখ্যা করতেন দু’জনে। শোভনকে কখনও ‘শোভনদা’ কখনও আবার ‘শোভনবাবু’ বলে সম্বোধন করতেন বৈশাখী। কিন্তু ফেসবুক আড্ডায় এখন আরও বেশি আন্তরিক বৈশাখী। এখন শোভনকে শুধু ‘শোভন’ অথবা ‘কানন’ (শোভনের ডাকনাম,যে নামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবর শোভনকে ডেকে এসেছেন) বলে ডাকেন তিনি। প্রসঙ্গত, ফেসবুকে ‘বৈশাখী শোভন ব্যানার্জি’ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে চাননি রত্না। যিনি এখন রাজ্যের বিধায়ক। তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য, ‘‘আমি ওঁদের বিষয়ে আর কোনও মন্তব্য করব না। খবরে থাকতে চেয়ে ওঁরা এ সব কাণ্ড ঘটাচ্ছেন!’’