খুন হওয়া দুই ছাত্রের বাড়িতে মন্ত্রী সুজিত বসু ও বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার সুপ্রতিম সরকার
বাগুইআটিতে নিহত দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বাড়িতে সোমবার বিকেলে গেলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু। একই সময় সেখানে গেলেন বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার সুপ্রতিম সরকার ও সিআইডির তিন সদস্যের একটি দল।
গোটা ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে গোড়া থেকেই। পরিবারের তরফে দুই ছাত্রের নিখোঁজের বিষয়টি জানানোর পরেও কেন পদক্ষেপ করা হল না পুলিশের তরফে, সেই প্রশ্ন উঠেছে। আত্মীয়দের আরও দাবি, তাঁরা মন্ত্রী সুজিতের কাছেও গিয়েছিলেন। তার পরেও কোনও সুরাহা হয়নি। নিহতদের পরিবারের আরও প্রশ্ন, মুক্তিপণ চেয়ে এসএমএসের কথা জানিয়ে এফআইআর দায়ের হওয়ার পরেও তদন্তে গড়িমসি কেন।
সূত্রের খবর, গোটা ঘটনা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুই ছাত্র খুনের ঘটনায় রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালবীয়ের সামনেই বুধবার তিনি ভর্ৎসনা করলেন বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার সুপ্রতিমকে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশ প্রশাসনের ‘দায়সারা মনোভাব’ নিয়ে কড়া বার্তাও দিয়েছেন তিনি। তার পরেও বিকেলে নিহত দুই ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন সিপি।
বিকেলে নিহত দুই ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন সিপি। সূত্রের খবর, দুই পড়ুয়ার পরিবারকে সঠিত তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পুলিশি তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তুলে মূলত বাগুইআটির থানার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন নিহতদের পরিবারেরা। সেই কারণেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়েছিল তাঁদের পক্ষ থেকে। কিন্তু তদন্তভার এখন সিআইডির হাতে যাওয়ায় পরিবারের তরফে আপাতত ভরসা রাখা হচ্ছে বলেই দাবি সূত্রের।
বাগুইআটির হিন্দু বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির ছাত্র অতনু দে এবং অভিষেক নস্কর। পুলিশ সূত্রে খবর, দুই স্কুল পড়ুয়া নিখোঁজ হয় গত ২২ অগস্ট। দু’দিন তাদের কোনও খোঁজ না পেয়ে বাগুইআটি থানায় অভিযোগ জানায় পরিবার। পরিবারের অভিযোগ ছিল, দু’জনকেই অপহরণ করা হয়েছে। পুলিশের কাছে অতনুর বাবা অভিযোগ করেন, তিনি মুক্তিপণ চেয়ে ‘মেসেজ’ পেয়েছিলেন। অপহরণকারীরা বার বার মুক্তিপণের অঙ্ক বদলায় বলেও অভিযোগ। এর প্রায় ১৩ দিন পর মঙ্গলবার বসিরহাট পুলিশ জেলা থেকে উদ্ধার হয় অতনু এবং অভিষেকের দেহ। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে সত্যেন্দ্র চৌধুরি নামে এক ব্যক্তি ওই দু’জনকে খুন করেছে। পুলিশ ওই কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। তবে এখনও অধরা সত্যেন্দ্র।
অতনু ও অভিষেকের পরিবারের এখন দাবি, মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্রকে দ্রুত খুঁজে বার করে শাস্তি দিতে হবে। সূত্রের দাবি, বুধবার বিকেলের অতনুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তার আশ্বাস দিয়েছেন সিপি।