রাতারাতি তারকা বাদাম বিক্রেতা ভুবন বাদ্যকর। নিজস্ব চিত্র।
ইদানীং নেটমাধ্যমে প্রবল জনপ্রিয় হয়েছে— ‘বাদাম বাদাম, দাদা কাঁচা বাদাম, আমার কাছে নাই গো বুবু ভাজা বাদাম’ গানটি। সামান্য সময়ের মধ্যে গোটা বিশ্বের কয়েক লক্ষ মানুষ গোগ্রাসে দেখেছেন-শুনেছেন। ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টা রিলস খুললেই বেজে উঠছে ‘বাদাম-গান’। গানটি গেয়েছেন ভুবন বাদ্যকর। বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের অন্তর্গত লক্ষ্মীনারায়ণপুর পঞ্চায়েতের কুড়ালজুড়ি গ্রামের বাসিন্দা তিনি। পেশায় বাদাম বিক্রেতা। নেশা সুর নিয়ে খেলা।
এ হেন ভুবনই এখন পড়েছেন আজব সমস্যায়। তাঁরই গান গেয়ে নেটমাধ্যমে বাহবা কুড়োচ্ছেন বহু মানুষ। কিন্তু গানের আদত স্রষ্টা কোনও ভাবেই অর্থ পাচ্ছেন না। কৃতজ্ঞতা স্বীকারেও থাকছে না তাঁর নাম। ভুবনের অভিযোগ, এই গান নেচে-গেয়ে অনেকেই লক্ষ লক্ষ রোজগার করে ফেলছেন। কিন্তু তাঁর হাত খালি। এ বার তা নিয়ে দুবরাজপুর থানায় নালিশ জানালেন ‘বাদাম-গান’-এর স্রষ্টা ভুবন।
ভুবনের দাবি, তাঁর গান ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। নেটমাধ্যমে সেই গান আপলোড করে প্রচুর টাকা রোজগার করছেন অনেকে। সে কারণেই পুলিশের দ্বারস্থ তিনি। ভুবন বলেন, ‘‘গানটি ভাইরাল হওয়ার পর প্রচুর মানুষ বাড়িতে ভিড় করছেন। সকলেই আমার গান ভিডিয়ো করতে চান। তার পর সেই গান নেটমাধ্যমে ছেড়ে অনেক টাকা আয়ও করছেন। অথচ আমার হাত খালি।’’ ইউটিউবে তাঁর গানের স্বত্ব ‘সংরক্ষিত’ হিসাবে দেখাচ্ছে। অথচ ভুবন বলছেন, ‘‘আমার কোনও ইউটিউব অ্যাকাউন্টই নেই!’’ ভুবনের দাবি, পুলিশ-প্রশাসন তদন্ত করে প্রাপ্য টাকা তাঁকে পাইয়ে দিক।
অন্য দিকে, গান জনপ্রিয় হওয়ায় রীতিমতো খ্যাতির বিড়ম্বনায় পড়ে গিয়েছেন বাদাম বিক্রেতা ভুবন। রাতারাতি তারকার মর্যাদা পাচ্ছেন। রাস্তায় বেরোলেই অনেকেই ছুটে এসে ছবি তোলার আবদার করছেন। তাতেই বেজায় ভয় পেয়ে গিয়েছেন ভুবন। এই কারণে শুক্রবার থানায় যাওয়ার সময় মাথায় হেলমেট পরে বাড়ি থেকে বেরোন তিনি। যাতে কেউ চিনতে না পারেন। ভুবনের সন্দেহ, কেউ তাঁকে অপহরণ করতে পারে। থানায় পৌঁছেও জনপ্রিয়তার মাসুল গুনতে হয়েছে তাঁকে। সেখানেও অনেকেই ভুবনকে চিনতে পেরে ছবি তোলার আবদার করেন। হাসিমুখে অবশ্য সে আবদার মেটান ভুবন বাদ্যকর।