ফ্রেজারগঞ্জে সতর্কতা প্রচার।
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’-এর জেরে শনি এবং রবিবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সমস্ত জেলাতেই। বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়াও বইবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। বিপর্যয় মোকাবিলায় নবান্ন থেকে ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মতো সতর্কতামূলক প্রচার চালাচ্ছে জেলা প্রশাসনগুলি।
জাওয়াদের জন্য ইতিমধ্যেই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সমুদ্রে যাওয়া প্রায় ৭৫০ ট্রলার ইতিমধ্যেই ফিরে এসেছে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। উপকূলের জেলাগুলির নীচু এলাকা থেকে ইতিমধ্যেই বাসিন্দাদের সরিয়ে আনা হয়েছে। সরানোর কাজও চলছে। ঘোড়ামারা, মৌসুনি, পাথরপ্রতিমা, নামখানার মতো দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে ইতিমধ্যেই ১১ হাজার জনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিপর্যয় মোকবিলা বাহিনীকেও তৈরি রাখা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক টি উল্গানাথন বলেছেন, ‘‘জরুরি বিভাগগুলির সমন্বয়ের কাজ চলছে। উপকূল এবং নীচু এলাকার প্রতি নজর রাখা হচ্ছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও তৈরি রয়েছে।’’
দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় এখন ধান ওঠার সময়। অনেকেই জমির পাকা ধান পুরোপুরি তুলে নিতে পারেননি। বৃষ্টির জেরে চাষের ক্ষতি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। সে দিকেও সজাগ দৃষ্টি রেখেছে কৃষি দফতর। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ধান কেটে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় কৃষি আধিকারিকেরা মাইকে করে গ্রামে গ্রামে এই মর্মে প্রচারও করছেন। সেই সঙ্গে ৬ ডিসেম্বরের আগে আলুর বীজ বপন করতে বারণ করা হচ্ছে।
জোরকদমে চলছে ধান তোলার কাজ। নিজস্ব চিত্র।
পূর্ব বর্ধমান জেলায় এখন পর্যন্ত ৩৫ শতাংশ ধান মাঠে রয়েছে বলে জেলা কৃষি দফতরের তরফে জেলা কৃষি আধিকারিক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘যে সব জমিতে কৃষকেরা এখনও পর্যন্ত আলুর বীজ বসানোর কাজ শুরু করেননি, তাঁরা যেন আগামী তিন-চার দিন আলুর বীজ না লাগান।’’
পর্ব বর্ধমানের এই চিত্র দেখা গিয়েছে হুগলি, হাওড়া, দুই মেদিনীপুর, নদিয়া, মুর্শিদাবাদেও। সেখানেও একই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কোমল বলেছেন, ‘‘ঝড়ের আগাম সতর্কবার্তা অনুযায়ী সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলাতেই বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।