আনন্দবাজার অনলাইনের ‘বছরের বেস্ট’এর মঞ্চ বক্তব্য রাখছেন প্রধান সম্পাদক অভীক সরকার। নিজস্ব চিত্র।
বাঁধ ভাঙার কথা হয় অনেক সময়ে। কিন্তু বাঁধ ভেঙে এগিয়ে চলা মুখের কথা নয়। বাধা ভাঙতে চাইলেই কি আর সব সময়ে কাউকে পাশে পাওয়া যায়? পুরনোকে নিয়ে চলা, ঐতিহ্যকে বয়ে তুলে ধরাই যে দস্তুর। কিন্তু এমন কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা সেই গতে বাঁধা নিয়মের বাইরে গিয়ে এগিয়ে চলেছেন। নতুন নিয়ম তৈরি করেন। আনন্দবাজার অনলাইন সেই দস্তুর ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়াসকে কুর্নিশ জানায়। শুক্রবার ‘বছরের বেস্ট’ অনুষ্ঠানে আনন্দবাজার অনলাইনের প্রধান সম্পাদক অভীক সরকার ছক ভাঙা সেই দূতদের আহ্বান জানালেন।
তবে ছক ভাঙা মানে পুরনোকে অস্বীকার করা নয়। নতুন করে ঐতিহ্য তৈরি করা। ঠিক যেমন খবরের অনলাইন মাধ্যম করছে। প্রধান সম্পাদক জানান, আনন্দবাজার অনলাইনও তেমন একটি প্রয়াস। অভীক বলেন, ‘‘সাধারণত সংবাদমাধ্যম খুব স্বাস্থ্যকর অবস্থায় নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও আনন্দবাজার অনলাইন এমন অনবদ্য ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটাচ্ছে। আমার ধারণা, তার কারণ একটাই— আমাদের কোনও হেরিটেজ নেই। আমরা লিগ্যাসি মিডিয়া নই।’’
প্রধান সম্পাদক মনে করেন, হেরিটেজ আর উত্তরাধিকার পিছু টানে। মনে করান, গত পঞ্চাশ বছরে যে দু’টি দেশ চমকপ্রদ উন্নতি করেছে, তাদের কোনও ঐতিহ্য নেই। একটি হল আমেরিকা। যে দেশের কোনও ইতিহাস নেই। আর একটি হল চিন। যে দেশ নির্মম ভাবে নিজেদের ইতিহাস মুছে ফেলেছে। তিনি বলেন, ‘‘যাদের ইতিহাস আছে, তারা পিছিয়ে পড়েছে।’’
শুক্রবারের অনুষ্ঠানের শুরুতে অভিনেতা-পরিচালক অনির্বাণ ভট্টাচার্য ‘বাঁধ ভেঙে দাও’ গানটি শোনান। সেই গানের কথা উল্লেখ করে অভীক বলেন, ‘‘আমার সাদা চুল আর দাড়ি দেখে ভুল বুঝবেন না। আমিও কিন্তু বাঁধ ভাঙি।’’
তার মানে কি কোনও উত্তরাধিকারই নেই? উত্তর দিলেন প্রধান সম্পাদকই। বললেন, ‘‘একটা উত্তরাধিকার আমাদের আছে। আমরা শ্রেষ্ঠত্বের অন্বেষণে মগ্ন।’’ আনন্দবাজার অনলাইনের মতো যে সকল বাঙালি শ্রেষ্ঠত্বের অন্বেষণ করে চলেছেন, তাঁদের কুর্নিশ জানান প্রধান সম্পাদক। জানান, সব আলো এখনও নিভে যায়নি। তিনি বলেন, ‘‘মারামারি, খুনোখুনির পাশে আর একটা বাংলা আছে। বৃহৎ বাংলা।’’ ‘বছরের বেস্ট’ এমন কয়েক জনকে স্বীকৃতি দিল, যাঁরা সেই বৃহৎ বাংলায় নিজেদের স্বাক্ষর রেখেছেন। বক্তব্যের শেষে সে কথা উল্লেখ করেন আনন্দবাজার অনলাইনের প্রধান সম্পাদক।