বাবুলের দাবি, ২০ সেপ্টেম্বর চিঠি দিয়েছেন তিনি। ফাইল চিত্র
তৃণমূলে যোগ দেওয়ার দিনেই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় জানিয়েছিলেন তিনি বিজেপি-র সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। ১৮ সেপ্টেম্বর শনিবার তৃণমূলে যোগ দেন বাবুল। কিন্তু তার পরে দু’সপ্তাহ কেটে গেলেও বাবুল এখনও আসানসোলের বিজেপি সাংসদ। নিয়ম অনুযায়ী সশরীরে লোকসভার অধ্যক্ষের কাছে গিয়ে সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়। এর জন্য বিজেপি ত্যাগের দু’দিন কাটতে না কাটতেই ওম বিড়লার কাছে সাক্ষাতের সময় চেয়ে চিঠি পাঠান বাবুল। কিন্তু এখনও সময় পাননি। জানা গিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত দিল্লিতে থাকলেও তার পরে রোম সফরে যাওয়ার কথা অধ্যক্ষের। এর পরে উৎসবের মরসুম চলবে। ফলে বাবুলকে সময় পেতে হলে আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে। পুজোর আগে আদৌ ইস্তফা দিতে পারবেন কি না,তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে।
সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিতে গত দু’সপ্তাহে দু’দফায় দিল্লি যান বাবুল। কিন্তু তাঁর দাবি, ওম বিড়লার কাছে আবেদন সত্ত্বেও সাক্ষাতের সময় পাননি। তিনি যে সময় চেয়েছেন, তার প্রমাণ হিসেবে বাবুল অধ্যক্ষকে পাঠানো চিঠিটি নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে প্রকাশও করে দিয়েছেন। শুক্রবার একটি সংবাদ সংস্থা লোকসভার সচিবালয়কে উদ্ধৃত করে এমন খবর প্রকাশ করে যে বাবুল আদৌ অধ্যক্ষের কাছে ইস্তফার জন্য যাননি। এর পরেই টুইট করেন বাবুল। সেখানে দাবি করেন, তিনি চিঠি দিয়েছেন এবং তা গ্রহণ করা হয়েছে গত ২০ সেপ্টেম্বর। সাংসদ হিসেবে পাওয়া নয়া দিল্লির বাংলো যে তিনি ছেড়ে দিয়েছেন, তার নথিও প্রকাশ করেছেন বাবুল।
কিন্তু কেন ওম বিড়লা সময় দিচ্ছেন না বাবুলকে। এ নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। কেউ কেউ বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে বাবুলকে খোয়াতে রাজি নয় বিজেপি। সেই লক্ষ্যে দু’দফার সাংসদকে বোঝানোর পালা চলছে। শুধু বাবুলকে হারানো নয়, আসানসোল আসনটি এখনই হারাতে চাইছে না বিজেপি। দলের অন্দরে এমন আলোচনা চলছে যে এখনই ওই লোকসভা আসনে উপনির্বাচন হলে দলের পক্ষে জয় পাওয়া মুশকিল। কারণ, ২০১৯ সালে আসানসোলের সাতটি বিধানসভা এলাকাতে বিজেপি এগিয়ে থাকলেও গত বিধানসভা নির্বাচনে জয় এসেছে মাত্র দু’টিতে। সদ্য রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া সুকান্ত মজুমদার ক’দিন আগেই বলেছিলেন, ‘‘যাঁরা দল ছেড়ে গিয়েছেন, তাঁরা ফিরে আসুন, তা-ই চাই। প্রয়োজনে সকলের সঙ্গে কথা বলতে রাজি।’’ আলাদা করে বাবুলের কথাও বলেন তিনি। সুকান্তর কথায়, ‘‘বাবুলদার সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে। উনি চাইলে আমি কথা বলতে রাজি।’’ তবে বাবুল-ঘনিষ্ঠদের দাবি, তিনি কোনও ভাবেই আর বিজেপি-র সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি নন।