BJP

BJP: ভবানীপুরে হার তো নিশ্চিতই, মমতার জয় কত ভোটে, সেই হিসেব কষছে গেরুয়া শিবির

রবিবারের ফল যে ৩-০ হতে চলেছে তার জন্য অন্তত মানসিক ভাবে প্রস্তুত বিজেপি। একেবারেই চুপ প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২১ ১৪:২৮
Share:

হারের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত বিজেপি। ফাইল ছবি।

উপনির্বাচনে জেতা আসনেও জয় পাওয়া যে কঠিন, সে অভিজ্ঞতা রয়েছে বিজেপি-র। ২০১৯ সালে স্বয়ং দিলীপ ঘোষের ছাড়া খড়্গপুর সদর তৃণমূলের কাছে হারাতে হয়েছিল গেরুয়া শিবিরকে। আর ভবানীপুরে গত বিধানসভা নির্বাচনে তো বড় ব্যবধানে জিতেছে তৃণমূল। তার উপর উপনির্বাচনে আবার প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট পরার হারও সন্তোষজনক নয়। তাই জেতার আশা নয়, বরং কত ভোটের ব্যবধানে পরাজয় তার অঙ্কই কষছে বিজেপি শিবির। রবিবার ভবানীপুরের সঙ্গে নির্বাচনের ফল ঘোষণা হতে চলা শামসেরগঞ্জ কিংবা জঙ্গিপুর নিয়েও দল আশাবাদী নয়। কারণমুর্শিদাবাদে না আছে সংগঠন, না ছিল হাওয়া। ফলে রবিবারের ফল যে ৩-০ হতে চলেছে তার জন্য অন্তত মানসিক ভাবে প্রস্তুত বিজেপি।

Advertisement

আর মমতার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল প্রচারপর্বে নিজেকে ‘লড়াকু’ হিসেবে তুলে ধরলেও ফল ঘোষণার আগের দিন একেবারেই চুপ। আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘আমি ফল নিয়ে ভাবছি না। যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। এখন অন্য কাজে ব্যস্ত রয়েছি।’’ প্রিয়ঙ্কা‘অন্য কাজ’-এ ব্যস্ত থাকলেও বিজেপি শিবিরের একাংশ হিসেব কষছেন পরাজয়ের ব্যবধান নিয়ে। রাজ্য নেতাদের প্রায় সকলেই মনে করছেন বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় উপনির্বাচনে জয়ের ব্যবধান বাড়িয়ে নেবে তৃণমূল। মমতা জিততে পারেন ৩০ থেকে ৪০ হাজার ভোটে।

ভোট প্রচারে যাই বলা হোক না কেন ভবানীপুর যে দলের জন্য কঠিন ঠাঁই, তা মানছেন রাজ্য নেতারা। এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, ‘‘আসলে উপনির্বাচন যখন রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় কোনও পরিবর্তন আনতে পারবে না বলে বোঝা যায়, তখন সাধারণ ভোটাররা চিন্তা কম করেন। এমন কী ভোট দিতেও সে ভাবে আগ্রহ দেখান না। সেটা পরিসংখ্যানই বলে দেয়।’’

Advertisement

এই বক্তব্য যেঅনেকাংশেই ঠিক, তার উদাহরণ আগেই দেখিয়েছে ভবানীপুর। ২০১১ সালেও এই আসনে উপনির্বাচনে জিতেছিলেন মমতা। সে বার নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত বক্সী যখন জিতেছিলেন, তখন এই আসনে ভোট পড়েছিল ১,৩৫,৭৪১টি। যা মোট ভোটারের ৬৩.৭৮ শতাংশ। পরে মুখ্যমন্ত্রী যখন উপনির্বাচনে প্রার্থী হলেন, তখন সেটা কমে হয়ে যায় ৯৫,০৬৪ অর্থাৎ ৪৪.৭৩ শতাংশ। মানে ১৯.০৪ শতাংশ কম। আবার ২০১৬ সালে মমতা যখন জিতলেন তখন ভোট পড়ে ১,৩৭,৪৭৫। মোট ভোটারের ৬৬.৮৩ শতাংশ। গত এপ্রিল মাসে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় যখন জিতলেন, তখন ভোট পড়েছিল ১,২৭,৫৩৬। মানে ৬১.৭৯ শতাংশ। আর এ বার পড়েছে ৫৭ শতাংশের একটু বেশি।

বিজেপি নেতারা মুখে না বললেও একান্ত আলোচনায় স্বীকার করছেন, প্রচারে উত্তাপ ছড়ানো গেলেও ভবানীপুরে ভোট করাতে পারেনি দল। বহুতলের বাংলাভাষী নন এমন বাসিন্দাদের ভোটের লাইনে দাঁড় করিয়ে জয় পেতে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘ভবানীপুর এলাকায় একটা বড় অংশের মুসলিম ভোটার রয়েছেন। তাঁদের ভোট ইভিএম বন্দি হলেও হিন্দু ভোটকে সে ভাবে একত্রিত করা যায়নি। ফলে তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান বাড়তে পারে। শোভনদেব জিতেছিলেন ২৮,৭১৯ ভোটে। এ বার মমতা তা টপকে যেতে পারেন।’’

হার নিশ্চিত জেনেও রবিবার কী বলা হবে, তার মহড়াও করে রেখেছে বিজেপি। ভোট গ্রহণের দিন থেকেই গেরুয়া শিবির বলতে শুরু করে, মুখ্যমন্ত্রীর জয় নিশ্চিত করতে কারচুপির আশ্রয় নিয়েছে তৃণমূল। অন্য দিকে, শাসকদল জয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে স্লোগান তুলেছে, ‘বি ফর ভবানীপুর, বি ফর ভারত’। এর পাল্টা দিতে এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘তৃণমূল ওটা বললে আমরাও ঠিক করে রেখেছি কী বলব। আমাদের স্লোগান হবে ‘বি ফর ভবানীপুর, বি ফর বাঁশদ্রোণী’। কারণ, ভবানীপুরে আমরা হাতেনাতে বাঁশদ্রোণী থেকে আসা ভুয়ো ভোটার ধরেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement