বাবুল সুপ্রিয়-জগদীপ ধনখড়-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র ।
শপথ বিতর্ক নিয়ে চাপানউতরের রেশ কাটছে না। তবে এ বার কিছুটা বিনীত সুরেই টুইট করলেন বালিগঞ্জ উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। রাজ্যপালের উদ্দেশে নতুন একটি টুইট করে তিনি বলেন, ‘রাজ্যপাল মহোদয়, আমি আনন্দিত এবং সম্মানিত যে আপনি আমার বিষয়টি বুঝতে নিজের মূল্যবান সময় নষ্ট করেছেন। তবে আপনি এক জন পিতৃতুল্য ব্যক্তি হওয়ার কারণে আমি শুধু আপনাকে জানাতে চাই যে, আপনার বোঝা উচিত যে আমি কোন আবেগ থেকে এই কথা লিখেছি।’
এর আগে শপথ বিতর্ক অব্যাহত রেখে রাজ্যপাল বাবুলের রবিবারের টুইটের পাল্টা টুইট করে জানিয়েছিলেন, ‘১৯৮৪ সালে পশুপতিনাথ সুকুল বনাম নেমচন্দ্র জৈন মামলায় সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে, শপথ না নিয়েও একজন নির্বাচিত সদস্য বিধায়কের সমস্ত কাজ করতে পারেন। ১৬ এপ্রিল হওয়া নির্বাচনের শংসাপত্র তাঁকে বিধায়ক হিসাবে জনসাধারণের সেবা করার অধিকার দিয়েছে।’
এর আগেও সোমবার বাবুল এবং রাজ্যপাল ধনখড়ের মধ্যে শপথগ্রহণ নিয়ে টুইটযুদ্ধ চলে। জোড়া টুইটে রাজ্যপালকে জবাব দেন বাবুল। গত দু’সপ্তাহ ধরে তাঁর শপথগ্রহণের বিষয়টি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের অনুমতির অপেক্ষায় আটকে ছিল। শনিবার সেই অনুমতি দেন রাজ্যপাল। যদিও শুক্রবার বিধায়ক পদে শপথ নিতে না পারায় টুইট করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাবুল। তবে শনিবার রাজ্যপালকে ধন্যবাদ জ্ঞাপক টুইটে স্পিকারের কাছ থেকে শপথ নিতে না পারায় ‘দুঃখ’ প্রকাশ করেন তিনি। তারই জবাব হিসেবে রবিবার টুইট করেন রাজ্যপাল। সেই টুইটের জবাবে বাবুল লেখেন, স্যর, যেহেতু আপনি আমার কাছে একটি প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন জনসমক্ষেই, তাই এই বার্তা এড়িয়ে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। বরং বিনয়ের সঙ্গে দায়িত্বপূর্ণ উত্তর দেওয়া প্রয়োজন, যদিও, আমার সীমিত জ্ঞানেই আমি জানি না সংবিধান শপথগ্রহণ বাধা দেয় কি না। বিধায়ক হিসেবেই জনসমক্ষে মহামান্য রাজ্যপালের উত্তর দিলাম।’ এই নিয়ে একে অপরকে উদ্দেশ্য করে আরও টুইট করেন বাবুল-ধনখড়।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিধানসভায় পৌঁছন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিধানসভায় গিয়ে তিনি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, তাঁদের মধ্যে বাবুলের শপথ গ্রহণ নিয়েই আলোচনা হয়। ইতিমধ্যেই ডেপুটি স্পিকার জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি শপথ গ্রহণের চিঠি পেলেই তা প্রত্যাখ্যান করবেন। এমতাবস্থায় রাজ্যপালকেই শপথ গ্রহণের দায়িত্ব নিতে হবে। তা না হলে আবারও পরিষদীয় দলকে উদ্যোগী হয়ে রাজ্যপালকে চিঠি দিতে হবে। এর পর বাবুলকে শপথ গ্রহণ করাতে রাজ্যপাল আবার অন্য কাউকে মনোনীত করতে পারেন। তবে এই বার এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হস্তক্ষেপ করতে পারেন বলেও সূত্রের খবর।