কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর বাবু মাস্টার। —নিজস্ব চিত্র
দিকে দিকে দল ও পদ ছাড়ার ছাড়ার হিড়িক। সেই তালিকায় এ বার নাম লেখালেন উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদের দাপুটে তৃণমূল নেতা বাবু মাস্টার ওরফে ফিরোজ কামাল গাজি। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের শিক্ষা তথ্য সংস্কৃতি ও ক্রীড়া দফতরের কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তিনি। বিভিন্ন ইস্যুতে দল তাঁর পাশে না দাঁড়ানোয় এই সিদ্ধান্ত, দাবি বাবুর। শীঘ্রই তৃণমূলও ছাড়বেন বলে ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন তিনি।
বেশ কিছু দিন ধরেই বেসুরো ছিলেন বাবু। কয়েক দিন আগেই সাংবাদিক সম্মেলন করে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, তৃণমূলেরই একাংশ চায় না তিনি দলে থাকুন। শুক্রবার কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর তিনি জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে মাছ চুরির মিথ্যে মামলা দেওয়া হয়। কিন্তু দল তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি নিজের এলাকায় ঢুকতে পারছেন না বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। এই সব কারণেই কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে ইস্তফা বলে দাবি বাবুর।
বাবুর সাংবাদিক সম্মেলনের পর তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, সমস্যা মিটে যাবে। তার পর খাদ্যমন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং সুব্রত বক্সী তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তাতেও যে ক্ষোভ মেটেনি, শুক্রবার তা স্পষ্ট হল। তাঁর দলত্যাগও এখন সময়ের অপেক্ষা বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। তবে বিজেপিতে যোগদান করবেন কিনা, সে বিষয়ে এখনই মুখ খুলতে নারাজ তিনি। বলেছেন, ‘‘সময় সব কিছুর উত্তর দেবে।’’
আরও পড়ুন: মমতাকে চিঠি লিখে দলত্যাগী শীলভদ্র, কলকাতা আসছেন জিতেন্দ্র
আরও পড়ুন: ফের কেন্দ্রের তলব মুখ্যসচিব, ডিজিকে, ভিডিয়ো বৈঠক চায় নবান্ন
২০০১ সালে বাম জমানায় স্কুল শিক্ষকের চাকরি পান বাবু। তার পর থেকে সক্রিয় সিপিএম কর্মী ছিলেন। ২০১১ সালে সিপিএম থেকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই তাঁর সঙ্গে দলের দূরত্ব বাড়তে থাকে। সন্দেশখালিতে খুনে যুক্ত থাকা-সহ ৫টি মামলা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ৩টি মামলা ভেড়ির মাছ চুরির অভিযোগে। সব ক’টি মামলাতেই তিনি জামিন পেলেও দলের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করে আসছিলেন বাবু। অবশেষে কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বাবু।