ফাইল চিত্র।
শুক্রবার তখন ঘড়ির কাঁটায় সকাল ৭টা। বাড়ির বাইরে লোকেদের ডাকাডাকিতে সদর দরজা খোলেন পরেশচন্দ্র অধিকারীর মেখলিগঞ্জের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী। নিজেদের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) অফিসার পরিচয় দিয়ে সদর দরজার ভিতরে ঢুকে পড়েন কয়েক জন। পরেশের মেয়ে অঙ্কিতার খোঁজ শুরু করেন তাঁরা। হাঁকডাক শুনে বেরিয়ে আসেন রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী মীরাও। ঘুম থেকে ওঠেন অঙ্কিতা।
বাড়ির সকলের মোবাইল ফোন জমা নিয়ে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পরেই মহিলা আধিকারিকদের উপস্থিতিতে অঙ্কিতাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন সময় মেয়ের পাশে ছিলেন মীরা। দৃশ্যতই তাঁকে বিধ্বস্ত দেখা যায়।
সূত্রের খবর, এসএসসি-তে তাঁর নিয়োগ নিয়েই প্রশ্ন করা হয় অঙ্কিতাকে। তাঁর নিয়োগ সংক্রান্ত নথিও সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা। তল্লাশি চালানো হয় বাড়িতে। অভিযানের বিষয়ে জানতে ফোন করা হলেও তা ধরেননি অঙ্কিতা। এ নিয়ে পরেশ বলেন, ‘‘আমি আগে বাড়ি যাই। ওদের (মেয়ে ও স্ত্রীর) কাছে শুনলেই জানতে পারব ওরা (ইডি) সারাদিন কী করল।’’
পরেশের বাড়িতে যখন অভিযানে ব্যস্ত ইডি, তখন সেই বাড়ি থেকে হাঁটা পথের দূরত্বে মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ক্লাস নিচ্ছিলেন ববিতা সরকার। উচ্চ আদালতের নির্দেশে চাকরি থেকে অঙ্কিতা বরখাস্ত হওয়ার পরে ৪ জুলাই সেই স্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন ববিতা। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ তিনি স্কুলে পৌঁছন। পরেশের বাড়িতে ইডির অভিযানের খবর ছড়িয়েছে স্কুলেও। চাপা আওয়াজে শিক্ষিকাদের মধ্যেও সেই আলোচনা চলতে থাকে। স্কুল সূত্রে খবর, সে সবে কান না দিয়ে রুটিন মেনে ক্লাস করান তিনি।
স্কুল থেকে ববিতা বার হন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ। তার পরে তিনি বলেন, ‘‘স্কুলে ক্লাস করাতে ব্যস্ত ছিলাম। সারা দিনে কী হয়েছে, জানি না।’’ পরেশ অধিকারীর বাড়িতে ইডি হানা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি তিনি।