Breast Cancer

স্তন ক্যানসারে লজ্জা কাটাতে কন্যাশ্রীর সাহায্য

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ এর তথ্য অনুযায়ী, ক্যানসারের কারণে যে সব মহিলার মৃত্যু হয়, তার মধ্যে অধিকাংশই স্তন ক্যানসারে।

Advertisement

নীহার বিশ্বাস 

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:২৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভারতে ক্যানসারে যত মানুষের মৃত্যু হয় তার ২৫ শতাংশই স্তন ক্যানসারে। উদ্বেগের বিষয় হল, সচেতনতার অভাবে স্তন ক্যানসার উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। তাই স্তন ক্যানসারকে বাগে আনতে এ নিয়ে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়াদের সচেতন করতে সারা রাজ্যের মধ্যে এই প্রথম দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন উদ্যোগী হল। জেলার কন্যাশ্রী ও স্বাস্থ্য দফতরের যৌথ উদ্যোগে শুরু হল এই সচেতনতা অভিযান। স্তন নিয়ে খোলামেলা আলোচনার ট্যাবু ভেঙে মেয়েদের এই ভয়ঙ্কর রোগ থেকে মুক্তি দিতে প্রশাসনের এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছে। শুক্রবার জেলা প্রশাসনের বালুছায়া মঞ্চে আয়োজিত স্বাস্থ্য দফতরের প্রজেক্ট প্রজ্ঞায় এনিয়ে আলোচনায় শহরের শতাধিক পড়ুয়া অংশও নিয়েছিলেন।

Advertisement

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ এর তথ্য অনুযায়ী, ক্যানসারের কারণে যে সব মহিলার মৃত্যু হয়, তার মধ্যে অধিকাংশই স্তন ক্যানসারে। গত ২৫ বছরে মহিলাদের মধ্যে এই প্রাণঘাতী রোগ দ্বিগুণ বেড়েছে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হল, এই স্তন ক্যানসারে এখনও পর্যন্ত ৬৬ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়েছেন। কিন্তু পরে এই ক্যানসারের সংক্রমণ আবার হতে পারে বলে আশঙ্কা থেকেই যায়।

মেয়েদের মধ্যে এ নিয়ে সচেতনতার অভাব থাকায় এই ক্যানসার ক্রমাগত বাড়ছে। যখন ধরা পড়ছে, তখন এই নিরাময় প্রায় অসম্ভব। ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে আক্রান্তদের। দক্ষিণ দিনাজপুরের মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে বলেন, ‘‘অল্প বয়স থেকেই মেয়েরা এই স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু এই ক্যানসার নিয়ে সঠিক ধারণা না থাকায় কেউই সচেতন নন। পরিস্থিতি বুঝতে আগে থেকে চিকিৎসাও করেন না। তাই যখন ধরা পড়ছে তখন আর একে সারিয়ে তোলা যাচ্ছে না। তাই আগে থেকেই সচেতন হওয়া খুব জরুরি।’’

Advertisement

যেখানে এখনও সমাজে স্তন নিয়ে আলোচনা বা স্তন ক্যানসার নিয়ে শিক্ষামূলক আলোচনা করতে সঙ্কোচ বোধ করেন, সকলে সেই সমাজে কী ভাবে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব? জেলার কন্যাশ্রী প্রকল্প আধিকারিক মহাদ্যুতি অধিকারি বলেন, ‘‘লজ্জা পেলে হবে না। লজ্জা ভেঙে সবাইকে সচেতন হতে হবে। এ জন্যই আমরা ওয়ার্কশপ করছি। স্কুল ও কলেজের কন্যাশ্রী মেয়েদের এ নিয়ে সচেতন করা হলে তারাই বাড়িতে গিয়ে মা, মাসি, পিসি, বোনদের এই ক্যানসার সম্পর্কে বোঝাতে পারবে। এই ভাবেই মেয়েদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো হবে।’’

প্রশাসন জানিয়েছে, স্কুল ও কলেজগুলিতে যাবে স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ টিম। তাঁরা কন্যাশ্রী মেয়েদের শেখাবেন কী ভাবে স্তন পরীক্ষা করে দেখতে হয়। এ ভাবেই পরীক্ষার কায়দা শিখে মেয়েরা নিজেই যে কোনও অসঙ্গতি বুঝতে পারবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারবে। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, স্তন ক্যানসারের প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে তা সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। আর ১০-২০ বছরের মধ্যে মেয়েদেরও এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা তাকে। তাই লজ্জা ভেঙে মেয়েদের এগিয়ে আসার প্রেরণা দেবে কন্যাশ্রী মেয়েরাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement