বাঁ দিকে, ভাঙচুর করা গাড়ি। ডান দিকে, বিজেপি নেতার নিরাপত্তারক্ষী ও তৃণমূলকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ। নিজস্ব চিত্র।
রাস্তায় রাখা মোটরবাইক সরানো নিয়ে তৃণমূলকর্মীদের সঙ্গে বিজেপি নেতার বচসা। তার জেরে তৃণমূলকর্মীদের বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে বিজেপি নেতার নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে তৃণমূলকর্মীদের সংঘর্ষ। বিজেপি নেতার গাড়ি ভাঙচুর। রবিবার রাতে একের পর এক ঘটনায় উত্তপ্ত হল হুগলি জেলার শ্রীরামপুুরের বল্লভপুর এলাকা। ওই ঘটনায় আহত হয়েছে পাঁচ তৃণমূলকর্মী। বিজেপি-র অভিযোগ, পরিকল্পিত ভাবেই গাড়ি ভাঙচুর করেছেন তৃণমূলের লোকজন। অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের পাল্টা দাবি, বিজেপি নেতার নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের কর্মীদের মেরেছে।
ঘটনার সূত্রপাত, রবিবার রাতে। বল্লভপুর এলাকায় নিজের ফ্ল্যাট থেকে বেরোনোর পর বিজেপি নেতা কবীর বসুর গাড়ি রাস্তায় রাখা বাইকের জন্য আটকে পড়ে। ওই বাইকগুলি সরাতে বলা হলে তা নিয়ে স্থানীয় তৃণমূলকর্মীদের সঙ্গে তাঁর নিরাপত্তারক্ষীদের বচসা শুরু হয়। সে সময় কবীরের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, কবীরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ বিক্ষোভকারীদের হঠাতে মারধর করে। তা নিয়ে তৃণমূলকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয় সিআইএসএফ কর্মীদের। ঘটনার কবীরের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ।
রবিবার সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান শ্রীরামপুরের সাংসদ তথা তৃণমূল নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, “সিআইএসএফ লাঠি দিয়ে দলের কর্মীদের মেরেছে। যেটা তারা করতে পারে না।”
আরও পড়ুন: ‘ভারত বন্ধ’এর দিন ছেড়ে বুধবার রাজ্যে আসছেন বিজেপি সভাপতি নড্ডা
কবীর বসু পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, “বিয়েবাড়ির জন্য রাতে বার হচ্ছিলাম। রাস্তা আটকে বসেছিল তৃণমূল কাউন্সিলর পাপ্পু সিংহ। ওঁদের সরে যেতে বলেন আমার দেহরক্ষীরা। তখন তাঁদের উপর চড়াও হয়।”
কল্যাণের অভিযোগ উড়িয়ে তিনি আরও বলেন, “দেহরক্ষীরা আত্মরক্ষার জন্য যেটা করার তা-ই করেছেন।” গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে তাঁর দাবি, “পরিকল্পিত ভাবে এটা করেছে তৃণমূল। আমার গাড়ি ভাঙচুর করে ফ্ল্যাটেও হামলা চালায়। এ ভাবে বিজেপিকে রোখা যাবে না।”
আরও পড়ুন: বাড়ির সামনে গ্যারাজ তৈরিতে বাধা, হাওড়ায় মারধর ক্যানসার আক্রান্তকে
এই ঘটনার পর তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর সন্তোষ সিংহ (পাপ্পু) বলেন, “বল্লভপুরে একটা রাস্তা তৈরি করা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মিটিং চলছিল। কবীর বসুর গাড়ি বেরোনোর সময় হর্ন বাজতেই থাকে। রাস্তায় থাকা কয়েকটা বাইক সরানোর আগেই ওঁর দেহরক্ষীরা বিনা প্ররোচনায় মারধর শুরু করেন।”
রবিবারের ঘটনা নিয়ে বিজেপি নেতাকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি কল্যাণ। তিনি বলেন, “শান্ত শ্রীরামপুরকে অশান্ত করতে কে এক নেতা কয়েক দিন ধরে এসে রয়েছেন। হুটার বাজিয়ে যাচ্ছেন যেন কত বড় নেতা। রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। জগদীপ ধনখড়ই তাঁকে পাঠিয়েছেন।” তবে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা অস্বীকার করে তাঁর সাফ মন্তব্য, “কোনও গাড়ি ভাঙচুর হয়নি।”
সূত্রের খবর, এই ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে রাতে কবীরের ফ্ল্যাটের সামনে ধর্নায় বসতে পরেন কল্যাণ। রাত পৌনে ১২টা নাগাদ সিআইএসএফ-এর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেছেন তিনি।