দত্তপুকুরের বিস্ফোরণস্থল। —ফাইল চিত্র।
গত এক বছরে অন্তত দশ বার!
গ্রামের মানুষ জানাচ্ছেন, রবিবার দত্তপুকুরের মোচপোলে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে ৯ জনের প্রাণ যাওয়ার পরে বেআইনি এই কারবার নিয়ে হইচই হচ্ছে। কিন্তু এর আগে একাধিক ছোটখাট বিস্ফোরণ ঘটেছে গ্রামে। জখম হয়েছেন কয়েক জন। বছরখানেকের মধ্যে বিস্ফোরণের সংখ্যাটা কম করে দশ। পঞ্চায়েত ভোটের আগে মোচপোল পশ্চিমপাড়ায় বিস্ফোরণ হয়েছিল বাজি তৈরির সময়ে। মুর্শিদাবাদ থেকে আসা এক শ্রমিক ঝলসে যান। ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। গ্রামের মানুষ জানাচ্ছেন, ওই শ্রমিক ভাড়া থাকতেন স্থানীয় আইএসএফ নেতা রমজান আলির বাড়িতে। ঘটনার পর থেকে রমজান পলাতক।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মোচপোল পশ্চিমপাড়ার পাশে বেরুনানপুকুরিয়া, নারায়ণপুর, কাঠোর, জালশুখা ও নীলগঞ্জের পাড়ায় পাড়ায়, বাগানে তৈরি হয় বাজি। সেখানেও বিস্ফোরণ ঘটেছে এর আগে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাজির কারবারি বলেন, “মশলা তৈরির সময়ে ছোটখাটো বিস্ফোরণ হয়েই থাকে। গত এক বছরে বেশ কয়েক ঘটেছে এমন ঘটনা। আহত হয়েছেন জনা দশেক শ্রমিক। তীব্রতা কম থাকায় এ সব প্রকাশ্যে আসে না। স্থানীয় চিকিৎসকদের ডেকে এনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়।" স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, সচরাচর বিস্ফোরণে জখম কাউকে নার্সিংহোম-হাসপাতালে পাঠানো হয় না। তা হলেই ঘটনা জানাজানি হওয়ার ভয় থাকে। গ্রামে যে চিকিৎসকদের আনা হয়, তাঁরা মূলত পল্লি চিকিৎসক। হাতে কিছু বেশি টাকা গুঁজে দিলে তাঁরাও এ সব কথা পাঁচকান করেন না।
জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘গ্রামের ভিতরে ছোটখাট কিছু ঘটলে সব সময়ে পুলিশের কানে আসে না। গত কয়েক বছরে বাজি ফেটে মৃত্যুর ঘটনা শোনা যায়নি।’’ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এর আগে বিস্ফোরণের কথা তাঁদের কানে আসেনি। আইএসএফ নেতৃত্বের দাবি, বেআইনি এই কারবার বন্ধ করা নিয়ে এর আগে গ্রামে বৈঠক হয়েছে। তবে পুলিশ-প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে বেআইনি কারবার বন্ধ করা সম্ভব নয়।