রাজ্যে আগাম ভোটের দাবি উস্কে দিলেন মুকুল

এই প্রেক্ষিতে উপস্থিতি নেতাদের কাছে তিনি জানতে চান, তা হলে কি ২০২১ অবধি রাজ্য সরকার চলতে দেওয়া উচিত নাকি বিধানসভা ভোট এগিয়ে আনা উচিত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৯ ০৩:৩০
Share:

মুকুল রায়।

বিজেপির অন্দরে বিধানসভা ভোট এগিয়ে আনার দাবি উস্কে দেওয়ার বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছেন দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায়। লোকসভা ভোটের ফলের পর্যালোচনা করতে মঙ্গলবার কলকাতায় মহারাষ্ট্র নিবাসে বৈঠকে বসে বিজেপি। দলীয় সূত্রের খবর, সেখানে মুকুল পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, লোকসভার ফলে বিজেপি ১৬টা জেলায় এগিয়ে আছে, আর চারটি জেলায় ৪০%-এর বেশি ভোট পেয়েছে। এই প্রেক্ষিতে উপস্থিতি নেতাদের কাছে তিনি জানতে চান, তা হলে কি ২০২১ অবধি রাজ্য সরকার চলতে দেওয়া উচিত নাকি বিধানসভা ভোট এগিয়ে আনা উচিত। জেলা নেতাদের অনেকেই বলেন, ভোট এগিয়ে এলেই ভাল। দলীয় সূত্রের আরও খবর, বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) রামলাল এ দিন ওই বৈঠকে বলেন, তাঁদের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট বলছে, এখনই রাজ্যে বিধানসভা ভোট হলে চমকপ্রদ ফল হবে।

Advertisement

তৃণমূল অবশ্য বিধানসভা ভোট এগনোর তত্ত্বকে ‘অলীক’ এবং ‘অগণতান্ত্রিক’ বলে মনে করছে। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ রাজ্যে বিজেপি যে ভোট পেয়েছে, তা সিপিএমের পাইয়ে দেওয়া। জনসমর্থনের ভিত্তিতে ওদের এই ভাবনা অলীকই নয়, অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক। তা ছাড়া, তৃণমূল সরকার চালাতে যে রায় পেয়েছে, তা কোনও ভাবেই কমেনি। বরং, এ বার লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ভোট বেড়েছে।’’

বস্তুত, এ দিন বৈঠকে ওই সব আলোচনা হলেও এখনও পর্যন্ত বিজেপির আনুষ্ঠানিক অবস্থান ‘অগণতান্ত্রিক’ ভাবে রাজ্য সরকার ভেঙে দিয়ে বিধানসভা ভোটে যাওয়ার পক্ষে নয়। দলের নেতৃত্বের একটা বড় অংশ মনে করেন, ওই পথে গেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে ‘অগণতান্ত্রিক’ হিসাবে তুলে ধরে মানুষের সহানুভূতি আদায় করতে পারবেন। অর্থাৎ, ওই পদক্ষেপ বিজেপির পক্ষে ‘আত্মঘাতী’ হবে।

Advertisement

বিজেপি সূত্রের আরও খবর, এ দিনের বৈঠকে দলের সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ বলেন, এই লোকসভা ভোট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মুখ’-এ পার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বিধানসভা ভোটে লড়তে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। যাঁর মোকাবিলা করার মতো কোনও ‘মুখ’ এখনও দল হাজির করতে পারেনি। সুতরাং, সংগঠন দিয়েই বিধানসভা ভোটে লড়তে হবে। এই প্রেক্ষিতেই শিবপ্রকাশ বলেন, ৫৮ হাজার বুথে সংগঠন থাকলেও বাকি ২০ হাজারে নেই। সুতরাং, ওই ২০ হাজার বুথে সংগঠন তৈরির এখন দলের আশু কর্তব্য হওয়া উচিত।

লোকসভা ভোটের পরের হিংসা পরিস্থিতি দেখতে সন্দেশখালি এবং ডায়মন্ড হারবারে সাংসদদের প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধাম্তও নিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, সুভাষ সরকার, শান্তনু ঠাকুর এবং সৌমিত্র খান যাবেন সন্দেশখালিতে। আর ডায়মন্ড হারবারে যাবেন লকেট চট্টোপাধ্যায়, জগন্নাথ সরকার এবং জ্যোতির্ময় মাহাতো। তাৎপর্যপূর্ণ হল, সন্দেশখালি যে লোকসভা কেন্দ্রে, সেই বসিরহাটে তৃণমূল প্রার্থী নুসরত জাহানের জয়ের ব্যবধান এ বার রাজ্যে সর্বাধিক— প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ। ডায়মন্ড হারবারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও জিতেছেন তিন লক্ষের বেশি ভোটে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement