—প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের জন্য বিশেষ দিন ও একটি নির্দিষ্ট গান নির্বাচন নিয়ে আগামী কাল, বৃহস্পতিবার রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব আসছে। রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্ন ও বিতর্কের মধ্যেই সরকার পক্ষের এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করার কথা বিরোধী দল বিজেপির। এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে এই বিতর্কে অংশগ্রহণ করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
জি-২০ সম্মেলনের নৈশভোজে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর তরফে পাঠানো আমন্ত্রণপত্রের সূত্রে দেশের নাম ‘বদল’ নিয়ে মঙ্গলবারই জল্পনা শুরু হয়েছে। সেই আবহেই রাজ্যের জন্য দিন ও গান নির্বাচনের প্রস্তাবও আনা হচ্ছে বিধানসভায়। ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে বিধানসভার গঠিত কমিটি ও মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা সর্বদল বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তার ভিত্তিতে তৈরি ওই প্রস্তাবটি বিধানসভায় আনবেন পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। আলোচনার জন্য এক ঘণ্টা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রশাসনিক মহলের বক্তব্য, নবান্নের মূল বৈঠকে ‘বাংলা দিবস’ নিয়ে যা প্রস্তাব এসেছে এবং রাজ্যের সঙ্গীত নিয়ে যে দাবিগুলি উঠেছে, লিখিত দাবিসনদের মধ্যে তারই প্রতিফলন থাকতে পারে। যার ভিত্তিতে বিধানসভার মূল প্রস্তাবের খসড়া হবে।
গত ২০ জুন পশ্চিমবঙ্গের ‘প্রতিষ্ঠা দিবস’ হিসেবে রাজভবনে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। অবিভক্ত বাংলার প্রাদেশিক আইনসভায় ১৯৪৭ সালের ২০ জুন বাংলা ভাগের বিষয়ে ভোটাভুটি শুরু হয়েছিল। ওই দিনটিকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের ‘প্রতিষ্ঠা দিবস’ উপলক্ষে। তবে রাজভবনের ওই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে তা মানতে অস্বীকার করে রাজ্য সরকার। সেই সূত্র ধরেই বাংলার জন্য বিশেষ দিন ‘বাংলা দিবস’ ও একটি ‘বাংলার গান’ নির্বাচনে উদ্যোগী হয় শাসক শিবির। বিধানসভায় সেই প্রস্তাব নিয়েই আলোচনা হবে। সর্বদল বৈঠকে না গেলেও সরকারের এই উদ্যোগের রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। অন্য দিকে, নবান্নের বৈঠকে এসইউসি-র তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, ১২ ডিসেম্বর দিনটি বাংলায় বিশেষ ভাবে পালনের জন্য বেছে নেওয়া যেতে পারে। কারণ, আন্দোলনের কাছে ব্রিটিশ সরকারকে মাথা নত করে ১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বর লর্ড কার্জনের প্রথম বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাব রদ করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল।
এ দিকে, রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণপত্রের সূত্রে ‘ইন্ডিয়া’ ও ‘ভারত’ নিয়ে শুরু চর্চার মধ্যে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধও কি নতুন করে লেখা হবে! গীতার শ্লোকও বদল করা হবে!’’ তাঁর আশঙ্কা, ‘‘এ ভাবে চলতে থাকলে বিধানসভা, লোকসভা, সংসদীয় ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়েই আশঙ্কা তৈরি হবে। দেশের মানুষ আতঙ্কিত বোধ করছেন।’’ কেন্দ্রীয় সরকারের এই ভূমিকার সমালোচনা করে পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী দেশে একনায়কতন্ত্র কায়েম করছেন।’’