—ফাইল চিত্র।
উপাচার্য নিয়োগে গড়িমসি নিয়ে আবার তাঁর সমালোচনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সেই সমালোচনার ফিরতি জবাব দিলেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই। আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে রাজ্যপাল বলেছেন, যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তার জবাব দিতে তিনি বাধ্য নন।
সোমবারই বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল বোসের সমালোচনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যপালের কাছে জানতে চাওয়া হয়, উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে কী কী করণীয় তা শীর্ষ আদালত স্পষ্ট বলে দেওয়ার পরও কেন আবার রাজভবনের তরফে চিঠি গিয়েছে নবান্নের কাছে?
গত ৬ নভেম্বর ওই চিঠি রাজভবনের তরফে নবান্নকে দেওয়া হয়েছিল বলে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছিলেন রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট আলোচনার কথা বলা সত্ত্বেও ওই চিঠিতে রাজভবন লিখেছিল, সুপ্রিম কোর্ট যে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে আলোচনা করতে বলেছে, তা তাদের অর্ডার কপিতে লেখা নেই। তা হলে কেন উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করা হবে!’’ যদিও অভিষেকের এই বক্তব্য খারিজ করে রাজ্যপালের আইনজীবী জানান, ৬ নভেম্বর নবান্নকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু সে চিঠির বিষয়বস্তু এটিই ছিল কি না, তা তাঁর জানা নেই। সে কথা শোনার পরই চিঠি নিয়ে প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়লেন রাজ্যপাল।
এর আগে গত ৬ অক্টোবর অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। দেশের শীর্ষ আদালত বলে দিয়েছিল, রাজ্যপাল আর অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না। এমনকি, যাঁদের তিনি নিয়োগ করেছেন, তাঁরাও উপাচার্য পদের সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। নিতে পারবেন না গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। একই সঙ্গে রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, ‘‘আর কত দিন রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অস্থায়ী উপাচার্যেরা থাকবেন?’’
মঙ্গলবার সাক্ষাৎকারে রাজ্যপালের কাছে সুপ্রিম কোর্টের এই সমালোচনা প্রসঙ্গেই জানতে চেয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে ওঠা চিঠি প্রসঙ্গ নিয়েও তাঁর বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। রাজ্যপাল চিঠি প্রসঙ্গে স্পষ্টই বলেছেন, ‘‘সাধারণত রাজ্যপাল ও তাঁর সাংবিধানিক সহকর্মীর মধ্যে যা আলোচনা হয় তা প্রকাশ্যে আসা উচিত নয়।’’
এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘তবে যে হেতু প্রশ্ন উঠছে, তাই আমি জবাব দিচ্ছি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নয়, পরামর্শে আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার জন্য চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। উনি এসেছিলেন। আমাদের আলোচনা হয়েছে। কী আলোচনা হয়েছে তা বলব না। আমরা দু’জনেই মহামান্য আদালতকে সম্মান করি। আমাদের আলোচনার সারমর্ম সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানানো হয়েছে।’’