ফাইল চিত্র।
কোভিডের মতোই মাঙ্কি পক্স ভয়ঙ্কর ছোঁয়াচে বলে চিকিৎসকদের অভিমত। তাই কেন্দ্র ও রাজ্য, উভয় সরকারই সতর্ক থাকতে চাইছে। কেন্দ্রের সাম্প্রতিক নির্দেশিকা মেনেই বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের কলকাতা বিমানবন্দরে মাঙ্কি পক্স সংক্রান্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে বুধবার জানান সেখানকার অধিকর্তা সি পট্টাভি।
বিদেশে বেশ কিছু জায়গায় মাঙ্কি পক্সের প্রকোপ শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেও এক যুবকের শরীরে ওই রোগের যাবতীয় লক্ষণ দেখে নড়েচড়ে বসেছিলেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তবে সেই যুবকের নমুনা পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, তিনি মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত নন।
বিদেশ থেকে এখন কলকাতায় প্রতিদিন ১৭-১৮টি আন্তর্জাতিক উড়ান আসছে। পট্টাভি বলেন, “সারা দিনে কমবেশি আড়াই হাজার যাত্রী। তাঁদের শরীরে বাড়তি তাপমাত্রা ছাড়াও ওই রোগের অন্য কোনও উপসর্গ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” কোনও সন্দেহজনক যাত্রী পেলে তাঁকে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে পাঠানো হবে বলেও জানান বিমানবন্দরের অধিকর্তা।
বিমানবন্দরে এই স্বাস্থ্যপরীক্ষার দায়িত্বে থাকা কর্তারা জানান, কোভিডের কারণে আগে থেকেই আন্তর্জাতিক যাত্রীদের উপরে নজরদারি চালানো হচ্ছিল। বিদেশ থেকে এসে নামার পরে বিমানবন্দরে একটি ফর্মও পূরণ করতে হচ্ছে তাঁদের। তার সঙ্গে এ বার যুক্ত হয়েছে মাঙ্কি পক্স নিয়ে সতর্কতাও।
অধিকর্তা জানান, বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ কলকাতায় আসেন মূলত দুবাই, দোহা, সিঙ্গাপুর ও ব্যাঙ্কক হয়ে। ওই চারটি রুটের উড়ানের যাত্রীদের উপরে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। তার বাইরেও বহু মানুষ বিদেশ থেকে দিল্লি, মুম্বই হয়ে কলকাতায় আসেন। প্রথমত, তাঁদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যপরীক্ষা দিল্লি-মু্ম্বই বিমানবন্দরেই হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, দেশের অভ্যন্তরীণ উড়ান থেকে শহরে আসা সব যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার মতো পরিকাঠামো কার্যত দেশের কোনও বিমানবন্দরেই নেই বলে মনে করছেন কর্তারা।
পট্টাভি বলেন, “স্বাস্থ্যপরীক্ষার পাশাপাশি আমরা মানুষজনকে সচেতনও করছি। সেই কাজে উড়ান সংস্থা ও অভিবাসন দফতরের অফিসারদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।”
রাজ্য সরকারের এক স্বাস্থ্য কর্তা বলেন, “কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী আগেই পরামর্শ সংবলিত বার্তা জারি করা হয়েছিল। এখনও তার কোনও বদল হয়নি। জ্বর, হাতে-পায়ে জল-ভরা ফুসকুড়ি, ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আইসোলেশনে পাঠাতে হবে। তিনি বা তাঁর ঘনিষ্ঠ কেউ শেষ ২১ দিনের মধ্যে বিদেশ থেকে এসেছেন কি না, নিতে হবে সেই খোঁজও। সন্দেহজনক রোগীর রক্ত বা লালারসের নমুনা পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে পাঠাতে হবে।” কোনও রোগীর রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে তাঁর সংস্পর্শে আসা লোকজনকে চিহ্নিত করে ২১ দিন আলাদা রেখে পর্যবেক্ষণ করতে হবে বলেও জানান ওই স্বাস্থ্যকর্তা।