দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের অনতিবিলম্বেই নবান্নে এলেন শুভেন্দু অধিকারী। সকাল সাড়ে ১১টার কিছু পরেই শুভেন্দুর গাড়ি প্রবেশ করে নবান্নের চত্বরে। তিন জন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে ভিতরে ঢোকেন রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। নবান্ন সূত্রে খবর, ভিতরে গিয়ে রাজ্যের মুখ্য সচিবের সঙ্গে দেখা করেছেন শুভেন্দু। জানিয়ে এসেছেন, বাংলার বিরোধী নেতা এবং জনপ্রতিনিধিদের বঞ্চনার কথা । তবে, এমনটা যে করতে চলেছেন, তা আগেই ঘোষণা করেছিলেন শুভেন্দু।
গত শুক্রবারই বিরোধী দলনেতা জানিয়েছিলেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকের দিনেই নবান্ন এবং রাজভবনে পাল্টা কর্মসূচি করবেন। সেই কর্মসূচিতে থাকবে, বাংলায় বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের বঞ্চনার কথা। পাশাপাশি যে সমস্ত জায়গায় বিজেপি জনপ্রতিনিধিরা রয়েছেন, সেখানকার মানুষের প্রতি রাজ্য সরকারের বঞ্চনা এবং একপেশে মনোভাবে কথাও। শুভেন্দু বলেছিলেন, “পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি তথা বিরোধী সাংসদ, বিধায়ক, পঞ্চায়েত সদস্য এবং কাউন্সিলরদের বঞ্চনার বিরুদ্ধে আগামী ২০ তারিখে আমরাও পথে নামব। বাংলায় কী ভাবে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হয় সে কথাই জানাতে প্রয়োজনে নবান্ন বা রাজভবনের সামনে যাব।’’ সেই মতো বুধবার বেলায় দিল্লিতে মোদী-মমতা বৈঠক শেষ হওয়ার অনতিবিলম্বেই শুভেন্দুর গাড়ি প্রবেশ করে বাংলার প্রশাসনিক ভবন নবান্নে।
তখন বিজয় চকে দাঁড়িয়ে সাংবাদিক বৈঠক শুরু করেছেন মমতা। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন দলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বাকি লোকসভা-রাজ্যসভার প্রতিনিধিরাও। শুভেন্দু তখনই নবান্নে ঢোকেন তিন বিজেপি বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে। বলেন, ‘‘আমি সাড়ে ১০টার সময় ফোন করেছিলাম রাজ্যের মুখ্যসচিবকে। তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলছিলেন না। তাই আমি আর কিছু না বলেই চলে আসি। তবে আমরা আইন মেনে চলা নাগরিক। তাই প্রশাসনিক দফতরের চারপাশে ১৪৪ ধারা জারি থাকে। তাই পাঁচ জনের বেশি লোক নিয়ে আসিনি।’’ অবশ্য পাঁচ জনের বেশি লোক নিয়ে নবান্ন অভিযান করলে ১৪৪ ধারায় আটকেই যেতেন শুভেন্দু।
বুধবার সম্ভবত সে জন্যই চার জন বিজেপি বিধায়ক এসেছিলেন নবান্নে। শুভেন্দুর সঙ্গে ছিলেন বাংলার তিন বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি, বিশাল লামা এবং শঙ্কর ঘোষ। নবান্নে পৌঁছনোর পর তাঁরা হাতে পোস্টার নিয়ে ভিতরে ঢোকেন এবং দেখা করেন রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে। পরে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকেদের শুভেন্দু বলেন, ‘‘দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রী লোক দেখিয়ে বাংলার প্রাপ্য টাকা চাইতে গিয়েছেন। কিন্তু আমরা এখানে এসেছি বাংলার বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের বঞ্চনার কথা জানাতে। কারণ এখানে বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের কণ্ঠরোধ করা হয়। প্রশাসনিক বৈঠকগুলিতেও ডাকা হয় না তাঁদের। এমনকি, তাঁদের এলাকার জনগণও সুযোগ-সুবিধা পান না। এ ভাবে রাজ্য সরকার যে ভাবে বিরোধীদের প্রতি বঞ্চনা করছে, আমরা তারই পাল্টা কর্মসূচি করেছি এখানে। ’’
এর সঙ্গেই ইউপিএ জমানায় বাংলা কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাবদ কত টাকা পেত আর এখন কত পায়, তার হিসাব পাশাপাশি সাজিয়ে একটি পোস্টারও নিয়ে হাজির হন শুভেন্দুরা নবান্নে।