তাঁকে হেফাজতে নিয়ে পরবর্তী জেরায় আরও ধোঁয়াশা স্পষ্ট হবে বলে ধারণা সিবিআই-এর। ছবি: সোমনাথ মণ্ডল।
খারিজ জামিনের আবেদন। নারদকাণ্ডে ধৃত আইপিএস অফিসার সৈয়দ মহম্মদ হুসেন মির্জাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল সিবিআই-এর বিশেষ আদালত। পরবর্তী শুনানি হবে ১৫ অক্টোবর।
সোমবার মির্জাকে ফের পেশ করা হয় আদালতে। এ দিন সকালে তাঁকে নিজাম প্যালেসে সিবিআই-এর দফতর থেকে নিয়ে যাওয়া হয় সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে। আদালতসূত্রে জানা গিয়েছে, জামিনের পক্ষে সওয়াল করেন মির্জার আইনজীবী। অন্যদিকে জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের আবেদন করেন সিবিআই-এর আইনজীবী। সেই আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক অনুপম মুখোপাধ্যায়।
ধৃত পুলিশকর্তার কাছ থেকে ইতিমধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন সিবিআই-এর এক আধিকারিক। তাঁকে হেফাজতে নিয়ে পরবর্তী জেরায় আরও ধোঁয়াশা স্পষ্ট হবে বলে ধারণা সিবিআই-এর।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের পুলিশ কর্তা এসএমএইচ মির্জা। সে দিন বিকেলেই তাঁকে নগর দায়রা আদালতে হাজির করানো হয়। সিবিআইয়ের ওই বিশেষ আদালতে তদন্তকারী সংস্থা মির্জাকে পাঁচ দিন নিজেদের হেফাজতে রাখার আবেদন জানিয়েছে। সেই আবেদন মঞ্জুর করে বিচারক ওই পুলিশ কর্তাকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মেয়াদ শেষ হওয়ায় সোমবার ফের তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়।
এর আগে রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার কিছু আগে এসএমএইচ মির্জাকে নিয়ে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের বাড়িতে যায় সিবিআই। সঙ্গে সিআরপি-র জওয়ানেরাও ছিলেন। এলগিন রোডের সেই বাড়িতে তখন মুকুল ছিলেন। মির্জার দাবি, তিনি এই বাড়িতে এসেই মুকুলের হাতে টাকা তুলে দিয়েছেন। সিবিআই সূত্রের খবর, সেই ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়। তবে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন মুকুল নিজে।
প্রায় এক ঘণ্টা পরে তদন্তকারী গোয়েন্দারা মুকুলের বাড়ি ছেড়ে বেরোন। তার আগে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে নারদ মামলায় সিবিআইয়ের মুখ্য তদন্তকারী অফিসার রঞ্জিত কুমার জানান, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। মির্জার দাবি, তিনি মুকুলকে প্রচুর টাকা দিয়েছেন। কবে কোথায় টাকা দিয়েছেন, জানতে চাইলে মির্জা এই ঠিকানার কথা বলেন। তাই মির্জাকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য আসা হয়েছে।
সিবিআইয়ের দল বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে ফ্ল্যাট থেকে নেমে মুকুল পাল্টা অভিযোগ করেন, ‘‘আমি নারদ কাণ্ডে কোনও টাকা নিইনি। ভিডিয়োতে আমার টাকা নেওয়ার ছবি দেখাতে পারলে আমি মেনে নেব। ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। মির্জা আমার সঙ্গে এ বাড়িতে দেখা করতে এসেছিলেন। সেই ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য সিবিআই এসেছিল।’’
সিবিআইয়ের অবশ্য দাবি, গত কয়েক দিনের জেরায় মির্জা তাঁদের জানিয়েছেন, তিনি এলগিন রোডে মুকুলের বাড়িতে গিয়ে দেড় কোটি টাকারও বেশি দিয়ে এসেছিলেন। শনিবার মুকুল যখন সিবিআইয়ের কাছে আসেন, যখন তাঁকে মির্জার সামনে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তখনই এই ঘটনার পুনর্গঠনের প্রস্তাব পেশ করা হয়। মুকুলের অনুমতি নিয়েই মির্জাকে তাঁর ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: মির্জা ফ্ল্যাটে এসেছিলেন মেনেও, টাকা লেনদেনের অভিযোগ অস্বীকার করলেন মুকুল
আরও পড়ুন: ‘নেই’ বলে কিছু নেই, দলকে বার্তা সূর্যের