অনুব্রতর নিশানায় গদাধর

বাহিরী-পাঁচশোয়া অঞ্চলটি বোলপুর ব্লকে হলেও নানুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। ২০১১ সালে নানুর থেকে তৃণমূলের টিকিটে জিতে বিধায়ক হন গদাধর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:১২
Share:

বাহিরীতে অনুব্রত মণ্ডলের জনসভায়। নিজস্ব চিত্র

বিজেপি-তে যোগ দেওয়া নানুরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক গদাধর হাজরাকে সভা মঞ্চ থেকে আক্রমণ করলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সোমবার বোলপুরের বাহিরী-পাঁচশোয়া অঞ্চলে তৃণমূলের জনসভা ছিল। মূল বক্তা ছিলেন অনুব্রত। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ সহ জেলা নেতারা। ওই জনসভা থেকে এ দিন অনুব্রত গদাধরকে বিঁধে বলেন, ‘‘সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের টাকা লুটের পিছনে গদাধরও জড়িত রয়েছে। সে-ও সাধু ছিল না।’’

Advertisement

বাহিরী-পাঁচশোয়া অঞ্চলটি বোলপুর ব্লকে হলেও নানুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। ২০১১ সালে নানুর থেকে তৃণমূলের টিকিটে জিতে বিধায়ক হন গদাধর। একটা সময় এই বাহিরি-পাঁচশোয়া অঞ্চলে গদাধর ও তাঁর অনুগামীদের দাপট ছিল। এলাকা দখল নিয়ে নানুরের আর এক তৃণমূল নেতা কাজল শেখের অনুগামীদের সঙ্গে গদাধর-শিবিরের লোকজনের বিবাদ লেগেই থাকত। এই নিয়ে খুন-জখমও হয়েছে একাধিক বার। কয়েক বছর আগে এই বাহিরিতেই গদাধরের তিন অনুগামীকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল। তৃণমূল সূত্রের খবর, ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই অনুব্রতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে শুরু করে জেলা যুব তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি গদাধরের। এ বছর লোকসভা ভোটে দলের প্রচারে তাঁরে কার্যত ব্রাত্য রাখা হয়েছিল। লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরেই দিল্লিতে গিয়ে বিজেপি-তে যোগ দেন গদাধর। যদিও তাঁর যোগদানে জেলা বিজেপি-র বড় অংশই ক্ষুব্ধ।

সেই প্রসঙ্গ তুলে এ দিন অনুব্রত বলেন, ‘‘সে (গদাধর) দল থেকে পালিয়ে গিয়েছে। দল থেকে কেন পালিয়ে গিয়েছে, তা বলতে পারব না।’’ যোগাযোগ করা হলে গদাধর অবশ্য অনুব্রতের অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

Advertisement

দলের বাহিরি-পাঁচশোয়া অঞ্চলের প্রাক্তন সভাপতিকেও আক্রমণ করেছেন জেলা সভাপতি। ওই সভাপতি গদাধর-অনুগামী হিসেবেই পরিচিত। ওই প্রাক্তন নেতা ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে এলাকায় বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ সম্প্রতি উঠেছিল। বিক্ষোভও হয়েছে। অনুব্রতের দাবি, ‘‘যেমন বাপ, তেমনই তার বেটা! সাধারণ মানুষের টাকা লুটপাট করেছে ওরা।’’ উপস্থিত মানুষজনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের পয়সা নেওয়ার অধিকার নেই ওদের। ওদের ছাড়বেন না! ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। ওদের কাছ থেকে কড়ায়-গণ্ডায় হিসেব বুঝে নেবেন।’’

পাশাপাশি এ দিন বাহিরী-পাঁচশোয়া পঞ্চায়েতের দলীয় প্রধান শুভঙ্কর সাধুকে উদ্দেশ করে অনুব্রতের হুঁশিয়ারি, ‘‘প্রধান বলে তুমি কেউকেটা হয়ে যাওনি। যারা পঞ্চায়েত অফিস যাবে তাদের সম্মান করবে, এক কাপ চা দিয়ে বসতে বলবে। কেউ পঞ্চায়েতে গেলে তাকে মেজাজ দেখাবে না।’’ এলাকার বাসিন্দাদের দাবি মেনে এ দিন অনুব্রত ছোট শিমুলিয়া থেকে পাঁচশোয়া যাওয়ার জন্য একটি কালভার্ট তৈরি করে দিতে বলেন জেলা সভাধিপতিকে। পাশাপাশি পাঁচশোয়া থেকে গাজি ডাঙ্গাল এবং ইটন্ডা থেকে নতুনগ্রামের দু’টি নতুন রাস্তা পঞ্চায়েতকে করে দিতে বলেন।

এনআরসি বা নাগরিক পঞ্জি নিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি বিঁধেছেন বিজেপি-কে। বলেছেন, ‘‘আমার মাটি আমার সম্পত্তি। শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে এনআরসি করতে দেব না! যেমন করেই হোক এনআরসি রুখব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement