অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র।
প্রায় চার ঘণ্টায় যে কতবার তিনি শৌচালয়ে গিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। মুখে-চোখে টেনশনের ছাপ স্পষ্ট। কলকাতা বিমানবন্দরে দোলের দুপুর-বিকেলে তিনিই ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তিনি, বীরভূমের তৃণমূলের সভাপতি, বর্তমানে গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডল। আদালতের নির্দেশে এ দিন তাঁকে নিয়ে কলকাতা থেকে দিল্লি উড়ে যান ইডি বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তিন অফিসার।
কলকাতা থেকে ভিস্তারার উড়ান ছাড়ে পৌনে সাতটায়। আর অনুব্রতকে নিয়ে ইডি কলকাতা বিমানবন্দরে ঢোকে পৌনে তিনটে নাগাদ। কেন এত আগে ঢুকল ইডি? ইডি সূত্রের খবর, অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যেতে এ দিন বিকেল সাড়ে তিনটে ও সাড়ে পাঁচটার দু’টি উড়ানের টিকিট কেটে রাখা হয়েছিল। কিন্তু ফিসচুলা সংক্রান্ত সমস্যা থাকায় পরে ওই দু’টি উড়ানের টিকিট বাতিল করে সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় ভিস্তারার উড়ানের টিকিট কাটা হয়। ইডি-র দাবি, ওই উড়ানে বসার আসন অন্য উড়ানের থেকে আরামদায়ক। তাই, ঠিক হয় পৌনে সাতটার উড়ানেই অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হবে। অনুব্রত মাঝের চার ঘণ্টা ভিআইপি লাউঞ্জে ছিলেন।
কেন ভিআইপি লাউঞ্জ? বিমানবন্দর সূত্রের খবর, যেহেতু তিনি হেফাজতে থাকা অভিযুক্ত, তাই অন্য যাত্রীদের পাশে অতক্ষণ বসে থাকলে অনেক অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটতে পারত বলে মনে করেন তদন্তকারীরা। তাই, ইডি-র তরফে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ আসে ভিআইপি লাউঞ্জের জন্য। বিমানবন্দরে থ্রি-সি গেটের মুখে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে ঢোকার সময়ে হোঁচট খাওয়া ছাড়া আর কোনও অঘটন ঘটেনি।ভিআইপি লাউঞ্জে তিনি থাকাকালীন, বিমানবন্দরের বহু কর্মী ও অফিসারকে উঁকি-ঝুঁকি মারতে দেখা যায়। চার ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে বহুবার শৌচালয়ে যেতে দেখা যায়। এ দিনই ওই উড়ানে কলকাতা থেকে দিল্লি উড়ে যান জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল মনোজ সিন্হা-ও। এক সময় তাঁকেও ভিআইপি লাউঞ্জে অনুব্রতর মুখোমুখি বসে থাকতে দেখা যায়। এর বাইরে ওই লাউঞ্জে আর কাউকেই অনুব্রতর ধারে-কাছে ঘেঁষতে দেননি ইডি-র অফিসারেরা। বিমানের শেষ আসনে ইডি-র দুই অফিসারের মাঝে বসে দিল্লি উড়ে যান অনুব্রত।