Anubrata Mondal

Anubrata Mondal: ‘সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নেবে তৃণমূল’, অনুব্রত-কাণ্ডে বললেন শান্তনু, দিলীপ বললেন ‘খেলা শেষ’

গরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে আটক অনুব্রত মণ্ডল। মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করলেন সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী। সরব বিজেপি নেতারাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২২ ১৩:০৭
Share:

ফাইল চিত্র।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতোই কি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করবে তৃণমূল কংগ্রেস? গরুপাচার মামলায় বৃহস্পতিবার সকালে বোলপুরের বাড়ি থেকে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতিকে সিবিআই আটক করার পরই এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্য রাজনীতির আঙিনায়।

Advertisement

অনুব্রত প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেছেন, ‘‘স্বচ্ছ ভাবে প্রশাসন চলে। সরকার সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নেয়। তদন্ত তদন্তের মতো চলুক। সিবিআইয়ের জমে থাকা কেসের পাহাড়ও জানি। একেকটা তদন্ত শুরু করে শেষ করতে পারে না। দ্রুত তদন্ত শেষ করুক। দল নজরে রাখছে। সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নেবে।’’

বস্তুত, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছিল ঘাসফুল শিবির। তৃণমূলের সমস্ত পদ থেকে পার্থকে অপসারিত করা হয়েছে। এমনকি, মন্ত্রিত্ব থেকেও পার্থকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বীরভূমে তৃণমূলের দাপুটে নেতার ক্ষেত্রেও সেই একই পথে তৃণমূল নেতৃত্ব হাঁটেন কি না, সে দিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।

Advertisement

বিজেপিকে নিশানা করে শান্তনু আরও বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের এফআইআরে থাকা অনেক বিজেপি নেতা রয়েছেন, যাঁরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সিবিআই তাঁদের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করুক। এটা আমাদের দাবি।’’

অনুব্রতর আটক হওয়ার ঘটনা ঘিরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এই প্রসঙ্গে বীরভূমের ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ নেতাকে বিঁধে বিজেপি সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ টুইটারে লিখেছেন, ‘অনুব্রত মণ্ডলের খেলা শেষ... লাইনে আরও অনেকে রয়েছেন।’ বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কটাক্ষ, ‘‘বন্যেরা বনে সুন্দর, তৃণমূল নেতারা জেলে। এ বার জেলে থেকে বিশ্রাম করুন। লুকোচুরির শেষে ধরা পড়ে গিয়েছেন।’’ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল যে এক জন মাফিয়া, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে মুদির দোকান থেকে হাটে মাগুর মাছ বিক্রি করতেন, সে এখন হাজার কোটি টাকার মালিক! কাদের নির্দেশে গরুপাচার, কয়লাপাচার, বীরভূম জেলায় যে অত্যাচার করেছে, বেশ কিছু মানুষকে খুন করা— তিনি যার যার নির্দেশে করেছেন আর মুড়ির টিনে করে টাকা পাঠিয়েছেন, তাঁদের নামগুলো বলুন।’’ বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘গ্রেফতার এড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন, অনুব্রত একটা মুখোশ। ওঁর উত্থান তৃণমূলের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব হয়নি। বোলপুরে অপার সাম্রাজ্য বিস্তার হয়েছে, অনুব্রতের নির্দেশ ছাড়া সম্ভব হয়নি।মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে বাজেয়াপ্ত করেছেন। একাধিক বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন বীরভূমে। পুলিশকে বোমা মারা, মিথ্যা মামলা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, কার নির্দেশে হয়েছে?

বীরভূমের ‘বাহুবলী’ নেতার আটক হওয়া নিয়ে সরব হয়েছে সিপিএমও। এই প্রসঙ্গে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উনি চড়াম চড়াম ঢাক বাজানোর কথা বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্রয় দিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবৃতি দেওয়া উচিত। আমি তাঁর বিবৃতি দাবি করছি।’’

প্রসঙ্গত, গরুপাচার মামলায় অনুব্রতকে মোট দশ বার তলব করেছিল সিবিআই। তার মধ্যে মাত্র এক বারই হাজিরা দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার কিছু ক্ষণ আগে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বোলপুরে অনুব্রতর বাড়ি ঘিরে ফেলে সিবিআই। ঘণ্টাখানেক পর বাড়ি থেকে অনুব্রতকে বার করে গাড়িতে তোলেন সিবিআই আধিকারিকরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement