সুর চড়ায় শান্ত করলেন মলয়
Anubrata Mondal

‘গ্রুপবাজি’ চলবে না! পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে এজলাস থেকেই দলের নেতা-কর্মীদের বার্তা কেষ্টর

তৃণমূল সূত্রের দাবি, যে কোনও ভোটে বীরভূমে দলের কান্ডারি অনুব্রতই। এ বার তিনি জেল-বন্দি থাকায় সে জেলায় তৃণমূলের রণকৌশল কী হয়, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২২ ০৬:২২
Share:

বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র।

‘গ্রুপবাজি’ চলবে না, এজলাসেই দলের নেতা-কর্মীদের বার্তা দিতে শোনা গেল বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত অনুব্রত ওরফে কেষ্টকে শনিবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়। সেখানে দেখা করতে এসেছিলেন তাঁর জেলার তৃণমূলের কিছু নেতা-কর্মী। পঞ্চায়েত ভোটে দলের রণকৌশল নিয়ে সেখানেই তাঁদের নির্দেশ দিতে দেখা গেল কেষ্টকে। তিনি যে চিরদিন জেলে থাকবেন না, সে কথাও দলের লোকজনকে স্মরণ করিয়ে দেন।

Advertisement

এ দিন আদালতে প্রায় দেড় ঘণ্টার শুনানি শেষে, দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ এজলাস ছেড়ে যান বিচারক। এজলাসে একটি বেঞ্চে বসেছিলেন অনুব্রত। এর পরেই বীরভূমের নলহাটির বিধায়ক রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ, দলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় এবং দলীয় নেতা-কর্মীরা তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। কেউ দেন ঠাকুরের ফুল, কেউ দেন ওষুধের প্যাকেট।

তার পরেই ‘চেনা মেজাজে’ দেখা যায় অনুব্রতকে। কর্মীদের সূত্রে খবর, জেলায় দলের সাংগঠনিক নানা বিষয়ে খোঁজ নেন তিনি। কয়েক জনকে নিচু গলায় কিছু পরামর্শ দিতেও দেখা যায় অনুব্রতকে। তখনই এক কর্মী অনুব্রতকে কিছু একটা বলেন। তার পরেই অনুব্রতের গলা কার্যত সপ্তমে চড়ে। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘গ্রুপবাজি চলবে না। আমি জেলে চিরস্থায়ী থাকব না! ফেরার পরে ওখানে পৌঁছে এক ধার থেকে সকলকে ছেঁটে দেব। ভাল করে সবাই কাজ কর। সামনে পঞ্চায়েত ভোট।’ প্রত্যেককে নিজের বিধানসভা এলাকায় নজর দেওয়ার নির্দেশও দিতে শোনা যায় তাঁকে।

Advertisement

অনুব্রতকে এমন চড়া স্বরে কথা বলতে শুনে কাছে এসে তাঁকে শান্ত করেন মলয়। ১২টা ৫৫ মিনিট নাগাদ বিচারকের নির্দেশের কথা জেনে পুলিশ ও সিবিআইয়ের উপস্থিতিতে এজলাস ছাড়েন অনুব্রত। তার আগে উপস্থিত দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে তিনি জানতে চান, ‘খাওয়াদাওয়া করেছিস সবাই?’

তৃণমূল সূত্রের দাবি, যে কোনও ভোটে বীরভূমে দলের কান্ডারি অনুব্রতই। এ বার তিনি জেল-বন্দি থাকায় সে জেলায় তৃণমূলের রণকৌশল কী হয়, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে। অনুব্রত-হীন বীরভূমে সিপিএমে যোগদানের ঘটনাও ঘটেছে। সুর চড়াচ্ছেন বিরোধীরাও।

এ দিনই বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় সিউড়িতে বলেন, “মনোনয়ন করতে দেব না বলে বড় বড় আওয়াজ তুলেছিলেন। সেই আওয়াজ ফাটা বাঁশে পরিণত হয়েছে। সবাই এখন জেলে। পঞ্চায়েত ভোটে প্রত্যেক জায়গায় প্রার্থী দেব। আমরা জিতব।”

এই আবহে, এজলাস থেকেই কেষ্টর দেওয়া বার্তায় দলের কর্মীরা উজ্জীবিত হবেন বলে আশা এ দিন আসানসোলে আসা নেতাদের অনেকের। মলয় মুখোপাধ্যায় শুধু বলেন, ‘‘কোর্টে গিয়েছিলাম। কেষ্টদার সঙ্গে দেখা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement