Anit Thapa

GTA election: আগে জিটিএ-র ভোট চাই, গুরুংয়ের অনশনের হুমকি উড়িয়ে এক সুর অনীত থাপা, অজয় এডওয়ার্ডের

অনীত বলেন, ‘‘মানুষের সমর্থন গুরুংয়ের সঙ্গে নেই। গত চার থেকে পাঁচ বছর ধরে পাহাড় শান্ত। উন্নয়নের কাজ হচ্ছে। তাই জিটিএ-র নির্বাচন করতেই হবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২২ ১৯:৩৩
Share:

বাঁ দিকে অনীত থাপা, মাঝে বিমল গুরুং ও ডান দিকে অজয় এডওয়ার্ড

জিটিএ-র ভোট রুখতে বিমল গুরুংয়ের আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারিকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে দ্রুত ভোটের পক্ষেই জোর সওয়াল করলেন গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনীত থাপা। তাঁর বক্তব্য, জিটিএ ব্যবস্থা যখন পাহাড়ে আছে, তখন তার নির্বাচন হওয়াও জরুরি। জিটিএ-র ভোটের পক্ষে সওয়াল করেছে সম্প্রতি পাহাড়ের পুরভোটে বিপুল জয় পাওয়া অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টিও।

গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রিচমন্ড হিলে পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে জিটিএ-র ভোট করানোর কথা বলেন। কিন্তু সেই বৈঠকেই প্রথম বার বেসুরো বেজেছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রতিনিধি হিসেবে বৈঠকে যোগ দেওয়া রোশন গিরি। তার পর গুরুং নিজেও জিটিএ-র ভোট করানোর আগে পাহাড়ে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের দাবি তুলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে আমরণ অনশনে বসবেন। কিন্তু গুরুংয়ের দাবিকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে দ্রুত জিটিএ-র ভোট করানোর পক্ষে মত দিলেন অনীত। পাশাপাশি গুরুং-রোশন গিরিদেরই জিটিএ-এর মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত করে কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন। অনীতের কথায়, ‘‘জিটিএ তো বিমল গুরুং, রোশন গিরিরাই নিয়ে এসেছিলেন। তা হলে এখন সমস্যা কেন হচ্ছে!’’

Advertisement

কোন পথে জিটিএ-র ভোটের বিরোধিতা করে পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের দাবিদাওয়া তোলা হবে তার রূপরেখা তৈরি করতে আগামী ২ এপ্রিল কালিম্পঙে আলোচনাসভার ডাক দেওয়া হয়েছে। বকলমে সেই আলোচনাসভা মোর্চারই ডাকা বলে দাবি করেছেন পাহাড়বাসীর একাংশ। সেখানে বিজেপি-সহ সমস্ত রাজনৈতিক পক্ষকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবারই দাবি করেছেন গুরুং। যদিও ভোটের পক্ষে কথা বলা অনীত থাপা কিংবা হামরো পার্টি— কেউই এখনও সেই আলোচনাসভায় হাজির হওয়ার আমন্ত্রণপত্র পাননি বলে জানিয়েছেন।

কিন্তু একুশের নীলবাড়ির লড়াইয়ে তৃণমূলের জোটসঙ্গী হয়ে লড়াই করা গুরুংয়ের কেন ভিন্ন সুর? অনীতের দাবি, পাহাড়ে ক্রমশ জনসমর্থন হারাচ্ছেন গুরুং। সাম্প্রতিক ভোটের ফল তার প্রমাণ। তাই এ সব করে বিমল পাহাড়ে প্রাসঙ্গিক থাকার চেষ্টা করছেন। অনীতের কথায়, ‘‘বিগত চার, পাঁচ বছর ধরে পাহাড় শান্ত। উন্নয়নের কাজ হচ্ছে। তাই জিটিএ নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘তার পর পাহাড়ের মানুষের যা দাবি রয়েছে বা যে রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলা হচ্ছে তা নিয়ে দাবি জানাতে পারি।’’

Advertisement

অন্য দিকে, গুরুংয়ের সভায় যোগদান নিয়ে হামরো পার্টির মুখপাত্র প্রমসকর ব্লন বলেন, ‘‘এখনও কোনও আমন্ত্রণপত্র পাইনি। যদি আসে বিবেচনা করে দেখব। আগামী দিনে পাহাড়ে যে নির্বাচন হবে, হামরো পার্টি তাতেই অংশ নেবে। জিটিএ নির্বাচনেও দল অংশগ্রহণ করবে।’’

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ভোটবাক্সে ফুল ফোটাতে না পেরে গুরুং এ বার পাহাড়ে নিজের প্রাসঙ্গিকতা যাচাই করতে চাইছেন। জিটিএ-র ভোট রুখে স্থায়ী সমাধানের দাবিকে সামনে এনে রাজ্যের উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিতে চাইছেন। সেই লক্ষ্যেই ২ এপ্রিল কালিম্পঙের আলোচনাসভা। কিন্তু প্রশ্ন হল, সেটাই যদি গুরুংয়ের পরিকল্পনা হয়, তা হলে তাতে গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা এবং হামরো পার্টির অবস্থান কী হবে? দার্জিলিঙের রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মহল বলছে, পাহাড়ের রাজনীতিও পাহাড়ের আবহাওয়ার মতোই— সতত পরিবর্তনশীল। তাই ২ এপ্রিলের আলোচনাসভা শেষ পর্যন্ত কোন কোন দল হাজির হয়, সে দিকেই সকলের নজর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement