—প্রতীকী ছবি।
সেপ্টেম্বরে শিশুদের অন্নপ্রাশন দিবস পালন করে খাওয়াতে হবে পায়েস। গর্ভবতী মায়েদের দিতে হবে পুষ্টিকর খাবার। অঙ্গনওয়াড়িতে সেপ্টেম্বর জুড়েই এ ভাবেই পালন করার কথা পুষ্টি পক্ষের।
কিন্তু টাকা কোথায়? অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের অভিযোগ, মুখে পুষ্টি পক্ষের কথা বললেও তার কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। তাঁদের দাবি, পায়েস নয়, রোজ একটা করে গোটা ডিম দেওয়ারও টাকা থাকে না।
কেন্দ্র (৬০ শতাংশ) ও রাজ্য সরকারের (৪০ শতাংশ) যৌথ উদ্যোগে গর্ভবতী মা এবং ছ’বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়া এবং পড়ানো হয় অঙ্গনওয়াড়িতে। সেখানে প্রতিদিন শিশুদের জন্য ন’টাকা এবং গর্ভবতী মায়েদের জন্য ১২ টাকা বরাদ্দ। ওই টাকায় শিশুদের সপ্তাহে তিন দিন খিচুড়ি ও অর্ধেক ডিম এবং বাকি তিন দিন ভাত, আলু সেদ্ধ এবং একটা গোটা ডিম সেদ্ধ বরাদ্দ। গর্ভবতী মায়েরা অবশ্য গোটা ডিম পান ছ’দিনই।
অঙ্গনওয়াড়ির কর্মীদের কথায়, তিন দিন খিচুড়ি এবং অর্ধেক ডিমের সঙ্গে শিশুদের তরকারিও পাওয়ার কথা। কিন্তু খিচুড়ির দিন চাল-ডাল আর আলু কেনার পরে আনাজ কেনার মতো টাকা বাঁচে না। হিসাব দিয়ে এক কর্মীর দাবি, অর্ধেক ডিমে খরচ পড়ে সাড়ে তিন টাকা। বাকি সাড়ে পাঁচ টাকার মধ্যে চাল, ডাল কিনতেই লেগে যায় পাঁচ টাকা। পড়ে থাকা পঞ্চাশ পয়সার মধ্যে শিশু-প্রতি আলু কিনতে লাগে চল্লিশ পয়সা। কর্মীদের প্রশ্ন, আনাজের এই অগ্নিমূল্যে দশ পয়সা দিয়ে কী হবে?
একই ভাবে যে তিন দিন ভাত, আলু সেদ্ধ আর ডিম সেদ্ধ দেওয়া হয়, সেই দিনগুলিতে এক একটি ডিম কিনতেই খরচ হয়ে যায় সাড়ে ছ’টাকা। কর্মীদের অভিযোগ, বাকি টাকায় আলু সেদ্ধ দেওয়ার পরে আর মশলাপাতি কিনে ডিমের ঝোল রান্না করা সম্ভব নয়।
ওয়েস্ট বেঙ্গল অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার্স অ্যান্ড হেল্পার্স ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক মাধবী পণ্ডিত বলেন, ‘‘এই অবস্থায় কী ভাবে পুষ্টি পক্ষ পালন করা সম্ভব? কেন্দ্র-রাজ্য, দু’পক্ষকেই ডেপুটেশন দিয়েছি। কোনও ফল হয়নি।’’
মাধবীর অভিযোগ, ‘‘পুজোতে ক্লাবের জন্য অনুদান বাড়ে আর শিশুদের একটা গোটা ডিম দেওয়া যায় না?’’ মাধবী জানাচ্ছেন, অর্ধেক ডিমের মধ্যে একটু বেশি কুসুম পাওয়ার জন্যও বায়না করে শিশুরা।
নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা অবশ্য বলেন, ‘‘পুষ্টি পক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প। অঙ্গনওয়াড়ির শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্য রাজ্য সরকারের এরকম পুষ্টি সপ্তাহ পালন হয়। সেখানে সব রকম সহায়তা করা হয়। এই দ্রব্যমূল্যের বাজারে কেন্দ্রের অনুদান বাড়ানোর জন্য আমরা অনেক বার কেন্দ্রকে জানিয়েছি।’’