(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
দলের সর্বোচ্চ স্তরের দূরত্ব মিটিয়ে ফেলতে ‘সেতুবন্ধন’ হতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেসে। এই কাজ হাতে নিয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। শুক্রবার দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে রাজ্য সভাপতির দীর্ঘ বৈঠকে সেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
সরকারি কাজের গতিপ্রকৃতি নিয়ে বছর খানেক আগে থেকেই নানা প্রশ্ন তুলেছিলেন অভিষেক। আবার দল পরিচালনায় কিছু সিদ্ধান্ত পছন্দ ছিল না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। এবং তাকে কেন্দ্র করে যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, বৈঠকে তারই সমাধানের রাস্তা খোঁজা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে, এই দু’টি বিষয় নিয়ে মমতা ও অভিষেকের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেই এগোনো হবে। কারা কী ভাবে সেই দায়িত্ব পালন করবেন, তা নিয়ে বক্সীই দুই শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবেন। উৎসবের মরসুমের পর এই আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। দলের এক নেতা অবশ্য বৈঠক সম্পর্কে বলেন, ‘‘দলের দুই নেতা সংগঠন-প্রশাসন নিয়ে কথা বলতেই পারেন। এটা রুটিন।’’
সরকার বহু পরিকল্পনা হাতে নিলেও রূপায়ণে গাফিলতি নিয়ে দলের মধ্যে সরব হয়েছেন অভিষেক। মন্ত্রী ও আমলাদের নজরদারির অভাবে মানুষের কাছে প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছয় না বলেও মত তাঁর। একাধিক বার এই প্রশ্ন তুলে দলের নিয়মিত কাজকর্ম থেকে দূরে থেকেছেন তিনি। তাতে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে শাসক শিবিরের শীর্ষ স্তরে। সেই জট কাটাতে অভিষেকের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বক্সী। সেখানেই অভিষেক নিজের পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছেন তাঁকে। সূত্রের খবর, সরকারি কাজে নজরদারির অভাব ও আমলাতান্ত্রিক দুর্বলতা নিয়ে দু’জনেই সহমত।
আলোচনায় সংগঠন পরিচালনা নিয়েও কথা হয়েছে। দলের উপদেষ্টা সংস্থা যা মূলত অভিষেকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই কাজ করে, তাদের ‘কাজের এলাকা’ নিয়েও মমতার মনোভাবের কথা তোলেন বক্সী। সংগঠনে প্রস্তাবিত রদবদল কী ভাবে, কখন শুরু করা হবে, তা নিয়েও কথা হয়েছে। ঠিক হয়, সরকার ও সংগঠনের কাজে নজর রাখতে নিয়মিত মতবিনিময়ের ব্যবস্থা হবে। তাতে দুই শাখায় খামতি ধরা পড়লে তা দূর করতে পদক্ষেপ হবে। তাতে সরকারি কাজ সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হওয়ার পাশাপাশি সংগঠন নিয়ে দলে বিভ্রান্তি ছড়ানো বন্ধ হবে বলে মত নেতৃত্বের।
দলীয় সূত্রে খবর, শীর্ষ স্তরে এই দূরত্ব মেটাতে আগেও উদ্যোগী হয়েছিলেন বক্সী। বিষয়টি নিয়ে মমতার সঙ্গেও আলাদা করে কথা বলতে পারেন তিনি। এক নেতার কথায়, ‘‘চোখে ফের অস্ত্রোপচারের জন্য এক মাস দেশের বাইরে থাকবেন অভিষেক। ফিরে এলে এই আলোচনা প্রক্রিয়া দল ও সরকারেরজন্য ইতিবাচক হতে পারে।