—প্রতীকী ছবি।
প্রায় আট ঘণ্টা দেরিতে চলছিল উদয়পুর-গুয়াহাটি স্পেশাল ফেয়ার ট্রেন। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের বানারহাট স্টেশনে দাঁড়ানোরও কথা ছিল না। সেই ট্রেনকে শুক্রবার রাতে বানারহাটে দাঁড় করানোর অভিযোগ উঠল বজরং দল এবং শ্রীরাম সেনার সদস্যদের বিরুদ্ধে। তাঁদের দাবি ছিল, যাত্রিবাহী ট্রেনের পণ্যবাহী কামরায় গরু পাচার হচ্ছে। যদিও দেখা যায়, কামরায় রয়েছে কিছু মোষ। এর পরে, বজরং দল এবং শ্রীরাম সেনার সদস্যদের দাবি, গাদাগাদি করে ১৯টি মোষ ঢোকানো হয়েছে, যা বিধিবিরুদ্ধ। রেলের আধিকারিকেরা দাবি করেন, বিধিভঙ্গ হয়নি। শেষে গেরুয়া শিবিরের লোকজন ট্রেনটিকে যেতে দেন।
এই ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছে, চলন্ত ট্রেন থামিয়ে নথিপত্র পরীক্ষা করার এক্তিয়ার বজরং দল ও শ্রীরাম সেনার সদস্যদের কে দিল? তা ছাড়া, তাঁদের দাবি মেনে রেল কর্তৃপক্ষই বা দেরিতে চলা একটি দূরপাল্লার ট্রেনকে থামালেন কেন?
সূত্রের দাবি, বজরং দলের সদস্যেরা এক বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ফোন করেন। তিনি রেলের আধিকারিকদের ফোন করাতেই ট্রেনটি থামানো হয়। যদিও রেল-কর্তাদের বক্তব্য, গরু পাচারের অভিযোগ পেয়ে আরপিএফ ট্রেনটিতে তল্লাশি চালিয়েছিল। তবে শুক্রবার রাতে বানারহাট স্টেশনের মাঝের লাইনে ট্রেন থামার পরে, বজরং দল ও শ্রীরাম সেনার সদস্যদের গার্ডের কাছে গিয়ে নথিপত্র পরীক্ষা করতে দেখা যায়। রাত ১১টা ৭ মিনিট থেকে ১১টা ১৮ মিনিট পর্যন্ত ট্রেনটি বানারহাট স্টেশনে দাঁড়িয়েছিল। বিধিভঙ্গ হয়নি বলে রেল দাবি করায় ট্রেন ছাড়া পায়।
আলিপুরদুয়ারের ডিআরএম অমরজিৎ গৌতম শনিবার বলেন, “মোষগুলি যে ডিভিশনে বুক করে ট্রেনে চাপানো হয়েছিল, তারাই এ বিষয়ে যথাযথ তথ্য দিতে পারবে। আমাদের পক্ষে প্রত্যেক স্টেশনে দাঁড় করিয়ে এ ভাবে কাগজপত্র পরীক্ষা করা সম্ভব নয়।’’ উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “বিধিভঙ্গ হয়নি। তবে অভিযোগ যখন এসেছিল, তখন ট্রেনটিকে থামানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।”
শ্রীরাম সেনার কর্মী সন্তোষকুমার প্রসাদের দাবি, “খবর ছিল, ট্রেনের কামরায় গরু পাচার হচ্ছে। তাই ট্রেন দাঁড় করিয়ে তল্লাশি করা হয়। ১৯টি মোষ মিলেছে। তবে তাদের নেওয়ার কাগজপত্র বৈধ কি না, তা তদন্তসাপেক্ষ।’’ তাঁর সংযোজন, “একটি কামরায় কখনওই দশের বেশি গরু বা মোষ নিয়ে যাওয়া যায় না। আগামী দিনে রেলের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ জানাব। যা করেছি, রেলের অনুমতিতে নিয়ম মেনেই করেছি।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, “বিজেপি মনে করে, রেল তাদের সম্পত্তি। সাধারণ মানুষের যতই দুর্ভোগ হোক, ওদের কিছু যায়-আসে না।” বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “এ বিষয়ে কিছু জানি না।”