প্রতীকী ছবি।
সর্বভারতীয় বোর্ডের ছেলেমেয়েরা পুরো নম্বর পেলেও রাজ্যের বোর্ডের পড়ুয়ারা পান না কেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত অনেকেই বারবার সেই প্রশ্ন তুলেছেন। ইদানীং রাজ্যের বোর্ডের ছাত্রছাত্রীদেরও কেউ কেউ প্রায় পুরো নম্বর পাচ্ছেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষাতেও জয়জয়কার সেই দিল্লি বোর্ডের।
এ বার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির জন্য ওই প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম, তৃতীয় ও দশম স্থান অধিকার করেছেন দুর্গাপুরের সিবিএসই বোর্ডের হেমশিলা মডেল হাইস্কুলের পড়ুয়ারা। মেধা-তালিকায় এক থেকে দশের মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ডের মাত্র এক জন পড়ুয়া আছেন। তাঁর স্থান পঞ্চম। সার্বিক ফলাফলে অবশ্য দেখা যাচ্ছে, জয়েন্ট এন্ট্রান্সে উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ড থেকে পাশ করা সফল ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাই সব থেকে বেশি।
বৃহস্পতিবার জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফল প্রকাশ করেন জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ারম্যান মলয়েন্দু সাহা। প্রথম হয়েছেন দুর্গাপুরের হেমশিলা মডেল স্কুলের ছাত্র সোহম মিস্ত্রী। দ্বিতীয় কলকাতার সাউথ পয়েন্ট হাইস্কুলের তমোজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃতীয় হয়েছেন দুর্গাপুরের হেমশিলা মডেল স্কুলের কৌস্তুভ সেন। চতুর্থ স্থানে আছেন সাউথ পয়েন্ট হাইস্কুলের অঙ্গীকার ঘোষাল। প্রথম দশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ড থেকে আছেন শুধু অর্ক দাশ (পঞ্চম)।
এ বার জয়েন্ট এন্ট্রান্স দেওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করিয়েছিলেন এক লক্ষ ১৩ হাজার ৯১২ জন পড়ুয়া। তবে পরীক্ষা দেন ৮০,৯৭৯ জন। র্যাঙ্ক পেয়েছেন ৮০,৫৮০ জন। সাফল্যের হার ৯৯.৫ শতাংশ।
উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ডের ৪৮,৪২০ জন পরীক্ষা দিয়েছিলেন। সফল ৪১,৬৪৫ জন। আইএসসি বোর্ড থেকে পরীক্ষা দিয়েছিলেন ৫২১৪ জন। উত্তীর্ণের সংখ্যা ৩৯৩০। সিবিএসই বোর্ডের ৩৫,৫৭৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছেন ২০,৪৭১ জন। অন্যান্য বোর্ড থেকে পরীক্ষা দিয়েছিলেন ২৪,৭০৩ জন। পাশ করেছেন ১৪,৫৩৪ জন।
মেধা-তালিকায় উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ড পিছিয়ে পড়ছে কেন? উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাসের বক্তব্য, উচ্চ মাধ্যমিক ও জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা খুব কাছাকাছি সময়ে হয়। দু’টি পরীক্ষার প্রস্তুতি চালাতে গিয়ে ছাত্রছাত্রীরা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেন। বেশির ভাগ মেধাবী পড়ুয়াই উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা-তালিকায় স্থান পাওয়ার স্বপ্ন দেখেন। ‘‘তাই অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রী হয়তো জয়েন্ট এন্ট্রান্সের জন্য সে-ভাবে প্রস্তুতি চালাতে পারেন না। অন্যান্য বোর্ডের ছেলেমেয়েরা জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার জন্য মোটা টাকা খরচ করে আলাদা ভাবে টিউশন নেন। আলাদা প্রস্তুতি চালান,’’ বলেন মহুয়াদেবী। তবে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মেধা-তালিকায় উচ্চ মাধ্যমিক
বোর্ডের মাত্র এক জন স্থান পেলেও এই বোর্ড পাশের সংখ্যার বিচারে অন্য বোর্ডকে টেক্কা দেওয়ায় তিনি খুশি। মহুয়াদেবী বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিকের প্রস্তুতিতেই আমাদের ছেলেমেয়েরা জয়েন্ট পাশ করে যাচ্ছেন। এটা খুব ভাল দিক।’’ ছাত্রছাত্রীরা যাতে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফল হতে পারেন, সেই জন্য বেশ কিছু বই প্রকাশ করেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ারম্যান মলয়েন্দুবাবু জানান, যাঁরা র্যাঙ্ক পেয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকেই কাউন্সেলিংয়ের সুযোগ পাবেন। ২৫ জুন কাউন্সেলিং শুরু হবে, শেষ হবে ২০ জুলাইয়ের মধ্যে। পরবর্তী জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা হবে ১৯ এপ্রিল।