অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
অমিত শাহের এ বারের পশ্চিমবঙ্গ সফরে সাংগঠনিক বৈঠকে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির প্রসঙ্গ উঠবে কি না, তা নিয়ে চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। কয়েক দিন আগেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় দিল্লি গিয়ে শাহের সঙ্গে বৈঠক করার পর প্রকাশ্যে যা যা বলেছেন, তা থেকেই রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সম্ভাবনার ইঙ্গিত পাচ্ছেন পর্যবেক্ষকদের অনেকে। রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়-সহ এক ঝাঁক নেতা-সাংসদও শাহ এবং রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবি জানিয়ে এসেছেন।
কিছু দিন আগে একটি টিভি-সাক্ষাৎকারে শাহ বলেছেন, বিজেপি নেতাদের ওই দাবি ‘ন্যায়সঙ্গত’।। বিজেপির অন্দরে এখন আলোচনা চলছে— এ বার শাহের সামনে কি ওই দাবি আবার উঠবে? দলের একাংশের মতে, যদি ওঠে, তা হলে শাহকে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পক্ষে এবং বিপক্ষে দু’টি মতই শুনতে হবে। কারণ এ বিষয়ে বিজেপিতে মতভেদ আছে।
তিন বছর আগে পশ্চিমবঙ্গে এসে একটি আদিবাসী এবং একটি উদ্বাস্তু পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন শাহ। এ বারেও ফের আদিবাসী এবং উদ্বাস্তু পরিবারে ভোজনের কর্মসূচি রয়েছে শাহের। তবে সে বার সামনে ভোট ছিল না। শাহের তখন মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজ্যে বিজেপির সংগঠন বিস্তার। এ বারে পাখির চোখ আগামী বিধানসভা ভোট।
আরও পড়ুন: বাগডোগরায় ডিএম, সিপি-র সঙ্গে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী
আরও পড়ুন: দীপাবলিতে বাজি বন্ধে রাজ্যের ভরসা ‘মানবিক’ জনতাই
২০১৭ সালে শাহ উত্তরবঙ্গের নকশালবাড়িতে একটি আদিবাসী পরিবারের বাড়িতে মেঝেতে পাত পেড়ে বসে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন। উত্তর ২৪ পরগনার রাজারহাটের গৌরাঙ্গনগরেও একটি উদ্বাস্তু পরিবারে তাঁকে খেতে দেখা গিয়েছিল। আজ, বুধবার রাতে দিল্লি থেকে কলকাতায় এসে নিউটাউনের একটি অভিজাত হোটেলে রাত কাটানোর কথা শাহর। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার রবীন্দ্র ভবনে সরকারি এবং সাংগঠনিক কর্মসূচির ফাঁকে মধ্যাহ্নভোজ সারার কথা বাঁকুড়া ১ ব্লকের আন্ধারথোল গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি আদিবাসী পরিবারে। শুক্রবার মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন থাকবে ২০১৭ সালের মতোই গৌরাঙ্গনগরেরই একটি উদ্বাস্তু পরিবারে।
তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেসের বক্তব্য, বিজেপি শাসিত রাজ্যে দলিত-আদিবাসী নির্যাতনের ধারাবাহিক অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। তাই এ রাজ্যে ভোটের আগে দলের ‘আদিবাসী-দলিত বিরোধী’ তকমা মুছতে মরিয়া শাহ এই কৌশল নিচ্ছেন। তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেসের আরও বক্তব্য, জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে বিজেপি বিরোধী প্রচারের পরে উদ্বাস্তু-সহ অনেক মানুষই নাগরিকত্ব হারানোর ভয়ে বিজেপিকে সন্দেহের চোখে দেখতে শুরু করেছেন। রাজ্যের উপনির্বাচনে তার মাসুলও দিতে হয়েছে বিজেপিকে। তাই উদ্বাস্তু পরিবারে খেতে গিয়ে নাগরিকত্ব নিয়েও ‘আশ্বাসবাচক বার্তা’ দিতে চান শাহ। শুক্রবার দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরে পুজো দেওয়ার কর্মসূচিও রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।