Amit Shah

রাজ্যে শাহ ১৯শে, মুকুলেরা চান ৩৫৬

বিজেপি সূত্রের খবর, মতুয়া সম্প্রদায়ের সঙ্গে জনসংযোগের কর্মসূচিতে শাহকে নিয়ে যেতে চায় দল। তার জন্য ১৯ তারিখ হাবড়া বা বনগাঁয় তাঁর কর্মসূচি রাখার চেষ্টা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২০ ০৬:১০
Share:

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছবি পিটিআই।

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনা ঘিরে বিতর্ক চরমে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কড়া অবস্থান ঘিরে তাদের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের সংঘাত বেধেছে। তারই মধ্যে আগামী সপ্তাহে ফের রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই মাসে তাঁর রাজ্যে আসার কথা আগেই নির্ধারিত ছিল। কিন্তু নড্ডার সফরে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রেক্ষিতে শাহের এই আসন্ন সফরকে কেন্দ্র করে বাড়তি কৌতূহল তৈরি হচ্ছে। নড্ডা নাকচ করে গেলেও শাহ আসার আগে রাজ্যে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের দাবি ফের সামনে এনে ফেলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়।

Advertisement

বিজেপি সূত্রের খবর, আগামী ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর রাজ্যে থাকবেন শাহ। কোন দিন কোথায় তাঁর কী কর্মসূচি থাকবে, তার সবটা এখনও চূড়ান্ত নয়। তবে বিজেপি সূত্রের খবর, মতুয়া সম্প্রদায়ের সঙ্গে জনসংযোগের কর্মসূচিতে শাহকে নিয়ে যেতে চায় দল। তার জন্য ১৯ তারিখ হাবড়া বা বনগাঁয় তাঁর কর্মসূচি রাখার চেষ্টা হচ্ছে। ঠাকুরনগরে মতুয়া বাড়িতেও যেতে পারেন শাহ। দু’দিন আগেই ওই এলাকায় বড় সভা করে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে যদি সেখানে শাহ যান, তা-ও অর্থবহ বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন। পর দিন, ২০ তারিখ শান্তিনিকেতনে একটি সরকারি কর্মসূচি রয়েছে। তার বাইরে দলীয় কিছু অনুষ্ঠান শাহের থাকবে কি না, তা এখনও ঠিক হয়নি বলে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য। শাহের আগে আজ, শনিবার দু’দিনের জন্য কলকাতায় আসার কথা আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের।

তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য শাহের এই সফরকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্য, ‘‘যে-ই আসুক, কিছু এসে যায় না। আমরা বাংলার মানুষের সঙ্গে আছি। সরকার থাকবে কি থাকবে না, মানুষ ঠিক করবেন। বিজেপি, অমিত শাহ বা অন্য কেউ নয়!’’

Advertisement

দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে পাশে নিয়ে শুক্রবার মুকুলবাবু নড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। কৈলাস ও মুকুলবাবুর গাড়িও ওই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দু’জনেরই চোট লেগেছে বলে মুকুলবাবুর অভিযোগ। রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অন্য বিজেপি নেতাদের মতোই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এই প্রেক্ষিতেই এ দিন মুকুলবাবুর বক্তব্য, ‘‘বাংলায় আইনের শাসন বলে আর কিছু নেই। এই রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারি হওয়া উচিত।’’ তাঁর কনভয়ে হামলার অভিযোগ করার পরেও সর্বভারতীয় সভাপতি নড্ডা বৃহস্পতিবার কলকাতায় বলে গিয়েছেন, অনেকে আবেগের বশে রাষ্ট্রপতি শাসন চাইলেও তাঁরা গণতান্ত্রিক পথেই বাংলার শাসক দলকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চান। কিন্তু মুকুলবাবুর মতে, ‘‘বাংলায় অস্বাভাবিকতাই এখন স্বাভাবিক! কোনও কিছুই নিয়মে নেই। এই রকম আর কোথাও নেই।’’

রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যও এ দিন পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘নড্ডাজি’র ডায়মন্ড হারবার যাওয়ার পথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল বলে যে কথা পুলিশ বলছে, সেটা ডাহা মিথ্যা! দুষ্কৃতী জমায়েতের খবর আগে থেকে জানানো সত্ত্বেও পুলিশ-প্রশাসন কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি।’’

মুকুলবাবুদের হাত থেকেই এ দিন বিজেপির পতাকা হাতে নিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (খাদ্য) রতন ঘোষ। দু’বছর আগে পঞ্চায়েত ভোটে জিতে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হয়েছিলেন বনগাঁর এই তৃণমূল নেতা। গত ৯ তারিখ বনগাঁয় দলীয় সমাবেশে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। ওই দিনই কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। রতনবাবু জানিয়েছেন, রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে ‘সম্মান ও ভালবাসা’ পেতেই তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement