ফাইল চিত্র।
বাঙালি মনীষীদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের এই পর্যায়ে এ বার ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কলকাতার বাড়িতে যেতে চান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসের পরে আগামী শনিবার ফের দু’দিনের জন্য রাজ্য সফরে আসছেন শাহ। এই সফরের দ্বিতীয় দিন রবিবার তিনি কলকাতার বাদুড়বাগানে বিদ্যাসাগরের বাড়িতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। গত ২৩ জানুয়ারি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন পালনের কেন্দ্রীয় সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তৃতা করতে ওঠার সময় ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিতর্ক হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে ওই স্লোগান দেওয়ার প্রতিবাদস্বরূপ বক্তৃতা করেননি মমতা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সামনে গোটা ঘটনা ঘটলেও এ বিষয়ে তিনি একটি শব্দও খরচ করেননি। পরে রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার নেতারা জানিয়েছিলেন, ওই স্লোগান তাঁরা দিয়েছেন এবং তার জন্য তাঁরা গর্বিত। তার রেশ না মেলাতেই বুধবার জানা গিয়েছে, রবিবার শাহ বিদ্যাসাগরের বাড়িতে যেতে চান।
২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনের আগে কলকাতা উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে শাহের রোড শো চলাকালীন বিদ্যাসাগর কলেজে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হয়। ওই ঘটনায় অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। বিজেপি অবশ্য তৃণমূলের বিরুদ্ধে চক্রান্তের পাল্টা অভিযোগ তোলে। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা, লোকসভা ভোটের আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মস্থান সম্পর্কে শাহের ভুল তথ্য দেওয়া প্রভৃতি ঘটনা তুলে ইদানীং নিয়ম করে বিজেপিকে ‘বাঙালি বিরোধী’ এবং মনীষীদের সম্পর্কে ‘অজ্ঞ’ বলে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল নেতৃত্ব। পাশাপাশি, তৃণমূল, বাম এবং কংগ্রেস তিন পক্ষেরই বক্তব্য, নবজাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ বিদ্যাসাগরের বাড়িতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে যেতে চাওয়া শাহদের ভোট-কৌশল ছাড়া কিছুই নয়। আদতে বিজেপি-র মতাদর্শ নবজাগরণের মূল্যবোধের বিরোধী।
শনিবার শাহের মায়াপুরের ইসকন মন্দিরেও যাওয়ার কথা। ওই দিন ঠাকুরনগরে জনসভা এবং কলকাতায় দলের আইটি-সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের সঙ্গে বৈঠকের কর্মসূচিও রয়েছে তাঁর। রবিবার ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে সভা এবং উলুবেড়িয়ায় রোড শো করার কথা শাহের। রয়েছে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে যাওয়ার সম্ভাবনাও।