টার্গেট ভবানীপুর!
রাজনাথ সিংহ যা করেননি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাস তালুকে এ বার সেটাই করে দেখাতে পারেন অমিত শাহ।
ধর্মতলায় মমতা যেখানে প্রতি বছর শহিদ সমাবেশ করেন, ২০১৪ সালের নভেম্বরে সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি হুঙ্কার দিয়েছিলেন, ‘‘দিদি, ম্যায় হুঁ অমিত শাহ!’’ আড়াই বছর পর একেবারে মমতার পাড়ায় বাড়িতে বাড়িতে ঢুকে পড়তে চলেছেন বিজেপির এই সর্বভারতীয় সভাপতি!
বিজেপির বুথ কমিটির সদস্যদের জনসংযোগ শেখাতে অমিত আগামী ২৫ থেকে ২৭ এপ্রিল রাজ্যে থাকবেন। ওই সময়ে ২৬ তারিখ মমতার বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরে দলের একটি বুথ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। পাশাপাশি, ভবানীপুরের পাঁচ জন সাধারণ মানুষের বাড়িতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলি বোঝাবেন। সে দিন ঠিক একই সময়ে বিজেপির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় স্তরের কিছু নেতাও ভবানীপুরের পাঁচটি করে বাড়িতে জনসংযোগ করবেন।
গত শুক্রবার ভবানীপুরেই কর্মিসভা করে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। কিন্তু সেখানে মমতাকে মোটেই কড়া আক্রমণ করেননি তিনি। ফলে বিজেপি কর্মীদের প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় তাঁরা কিছুটা হতাশ হয়েছিলেন। বিজেপি সূত্রের দাবি, রাজনাথ যা পারেননি, সেটাই করে দেখাবেন অমিত।
আরও পড়ুন:কংগ্রেসেই তো আছি, বলে এলেন মানসেরা
পর্যবেক্ষকদের মতে, ভুলে গেলে চলবে না ২০১৪-র ভোটে ভবানীপুরে তৃণমূলের থেকে এগিয়ে ছিল বিজেপি। তবে এ বার খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্রে গিয়ে বিজেপি সভাপতির বাড়ি বাড়ি ঘোরার অর্থ— তৃণমূলের বিরুদ্ধে এ বার পুরোদস্তুর লড়াইয়ের বার্তা দিতে চাইছেন মোদী-শাহ। গত লোকসভা ভোটের পর এই লড়াই কিছুটা শুরু করেছিল বিজেপি। কিন্তু সংসদীয় রাজনীতির বাধ্যবাধকতায় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই পরে কিছুটা ঢিলে দেন তাতে। তখন ‘মোদীভাই-দিদিভাই’ স্লোগানও তুলেছিল কংগ্রেস ও বামেরা। কিন্তু এখন ভবানীপুরে কর্মিসভা করার মধ্যে দিয়ে বাংলার মানুষকে অমিত শাহ হয়তো এটাই বোঝাতে চাইবেন, তৃণমূলের সঙ্গে আর কোনও সমঝোতার প্রশ্ন নেই। বাংলায় জমি দখলের জন্য এখন ‘সিরিয়াস’ বিজেপি।
রাজ্য বিজেপির তরফে এ দিন জানানো হয়েছে, ২৬ তারিখ মহাজাতি সদনে বিশিষ্ট মানুষদের সম্মেলনও করার কথা অমিতের। পর দিন রাজারহাটের একটি বুথ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে সেখানেও বাড়ি বাড়ি যাবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।
অমিতের ভবানীপুর সফরের এক সপ্তাহ আগে বুধবার কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রে কর্মিসভা করেছেন কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। তবে রাজনাথের মতোই তিনি মমতাকে কড়া আক্রমণের পথে হাঁটেননি।