—ফাইল চিত্র।
প্রবল ভিড় হচ্ছে দলীয় সভায়। শাসক শিবিরের নেতা-কর্মী তো বটেই, বিধায়ক-সাংসদেরা পা বাড়িয়ে রয়েছেন বিজেপিতে যোগ দিতে। কিন্তু বাস্তবে বিজেপির প্রকৃত পক্ষে হাওয়া কতটা অনুকূলে, তা বুঝে নিতে শুক্রবার রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন অমিত শাহ। সন্ধ্যায় শাহের বাসভবনের বৈঠকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় ছাড়াও ছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশের মতো পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা। বৈঠকের পরে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমি শুনেছি, ২৩ জানুয়ারি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাজ্যে আসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।’’
বিজেপি সূত্রের মতে, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বৈঠকের পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু সন্ধ্যায় হঠাৎই বাংলার ওই নেতাদের দিল্লিতে ডেকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন শাহ। সূত্রের মতে, সম্প্রতি যে ভাবে তৃণমূল থেকে একের পর এক নেতা আসতে শুরু করেছেন, তাতে পুরনো বিজেপি নেতাদের একাংশ বেশ ক্ষুব্ধ। তাঁদের বক্তব্য, এত দিন যাঁদের দুর্নীতিগ্রস্ত বলে দল আক্রমণ শানিয়ে এসেছে, ভোটের মুখে তাঁদেরই দলে জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘পুরনো বিজেপি কর্মীরা তো বটেই, সাধারণ মানুষও বিশেষ ভাল ভাবে নিচ্ছেন না বিষয়টি। নিজেদের স্বার্থ বাঁচাতেই তৃণমূলের নেতারা যে দল পরিবর্তন করে বিজেপিতে আসছেন, তা ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে ওঠায় ক্ষুব্ধ দলের নিচু তলার কর্মীরাও।’’ এই বৈঠকে গোটা পরিস্থিতি যাচাই করা হয়। বৈঠক শেষে দিলীপবাবুও জানান, তৃণমূল-সহ অন্য দল থেকে বিজেপিতে যোগদান করতে ইচ্ছুকদের তালিকা নিয়ে কথা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বাছাবাছি করছি। সকলকে নেওয়া যাবে না।’’
দলে যোগদান-পর্বে ক্ষুব্ধ সঙ্ঘও। আমদাবাদে সঙ্ঘের তিন দিনের বৈঠকে অন্য দলের নেতাদের নিয়ে আসা নিয়েও কথা হয়েছে। বাংলায় বিজেপির সম্ভাবনা ধাক্কা খেতে পারে বলে মত অনেকের। যদিও তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসার ঘটনায় দলের জনপ্রিয়তায় প্রভাব পড়েনি বলেই দাবি দিলীপবাবুর। তাঁর কথায়, ‘‘তা হলে কি দলের জনসভায় এত ভিড় হত? মানুষ আমাদের সঙ্গেই রয়েছে। তারা পরিবর্তন চাইছে।’’
আরও পড়ুন: বঙ্গে বাদ প্রায় ৬ লক্ষ ভোটার, কমিশনের ফুল বেঞ্চ আগামী সপ্তাহে
আরও পড়ুন: দলের ব্যবহারে ‘দুঃখ’ পেলেও তৃণমূল ছেড়ে পালাব না, জানালেন ‘অভিমানী’ সাংসদ প্রসূন
সূত্রের খবর, শাহের সঙ্গে বৈঠক নিয়েও এক প্রস্ত বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে দিলীপ-মুকুলদের। প্রথমে ঠিক ছিল, বেলা তিনটেয় বিজেপির সদর কার্যালয়ে বৈঠকে বসবেন শাহ। কিন্তু সেখানে পৌঁছে মুকুলবাবু জানতে পারেন, বৈঠক পিছিয়ে সন্ধ্যা ৬টায় শাহের বাসভবনে হবে। অন্য দিকে, দিলীপবাবু দুপুরে দিল্লিতে নেমে খবর পান বৈঠক পিছিয়ে গিয়েছে। তিনি চলে যান অশোক রোডে দলীয় নেতা শিবপ্রকাশের বাড়িতে। বিজেপি সূত্রের খবর, ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি রাজ্য সফরে যাবেন শাহ। দলের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্বের বৈঠক নিয়মিতই
হয়ে থাকে বলে মন্তব্য করে দিলীপবাবু জানিয়েছেন, শাহ এবং জে পি
নড্ডা তাঁদের যা কাজ দিয়ে গিয়েছিলেন, তার কতটা হয়েছে, সেই খতিয়ানও নেওয়া হয়েছে।