পথে নেমেছেন সিনিয়র চিকিৎসকরাও।—নিজস্ব চিত্র।
এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অশান্তি দানা পাকিয়েছিল নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এখন তা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে গোটা রাজ্যে। জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতিতে সমর্থন করেছেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা। পথে নেমেছেন তাঁরাও। সব মিলিয়ে বুধবার সরকারি হাসপাতালগুলিতে কার্যত ভেঙে পড়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা। বেসরকারি হাসপাতালের অবস্থাও তথৈবচ।
এই পরিস্থিতি থেকে কবে মুক্তি? আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে যতক্ষণ না হস্তক্ষেপ করছেন, ততক্ষণ চলবে এই আন্দোলন। তাঁদের দাবি, ‘‘আমাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই হবে। কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে হবে।’’
জুনিয়রদের এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন সিনিয়র চিকিৎসকেরাও। এ দিন তাঁরা প্রতিবাদ জানিয়ে, এনআরএস থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ পর্যন্ত মিছিলও করেন। সেই প্রতিবাদ মিছিলে শহরের অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজ থেকেও এ দিন জুনিয়র ডাক্তাররা এসেছিলেন। মিছিলে শহরের নামী চিকিৎসকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সেই তালিকায় ছিলেন সুভাষ সরকার। সম্প্রতি তিনি বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতেছেন। সুভাষবাবু বলেন, “এটা কোনও হঠাৎ ঘটনা নয়। লাগাতার হয়ে আসছে। ডাক্তারদের উপর যেমন খুশি অত্যাচার চলবে না, মুখ্যমন্ত্রী এখানে আসুন। তিনি নিজে এসে বিবৃতি দিন। বলুন, এই ঘটনা আর ঘটবে না। যাঁরা ঘটাবে, তাঁরা শাস্তি পাবেন।’’ পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন,‘‘ক্লিনিক্যাল এস্টব্যালিসমেন্ট অ্যাক্ট-এর কী হল!”
আরও পড়ুন: চিকিৎসা না পেয়ে কারও মৃত্যু হলে দায় কার: অভিষেক, রাজ্যের কী পরিস্থিতি ভাবুন: দিলীপ
সুভাষবাবুর সঙ্গে অনেক সিনিয়র চিকিৎসকই এক মত। এনআরএস হাসপাতালে কর্মরত সিনিয়র চিকিৎসক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়যেমন বলেন, “স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এসেছিলেন। কিন্তু যাঁরা আন্দোলন করছিলেন, তাঁদের সঙ্গে তিনি কথা বলেননি। ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন এখানে কোনও কাজের পরিস্থিতি নেই। আমাদের এই আন্দোলন চলবে।”
আরও পড়ুন: ছ’মাসের শিশু কোলে বাবার আর্তি, ‘ছেলেটাকে বাঁচান’, জুনিয়র ডাক্তাররা বলে দিলেন, ‘এখানে কিছু হবে না’
ডক্টরস্ ফোরামের ডাকে এ দিন রাজ্যজুড়ে সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে আউটডোর বন্ধ রাখার ডাক দেওয়া হয়েছিল। যার জেরে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি খাস কলকাতাতেও হাসপাতারগুলিতে আউটডোর বন্ধ ছিল। এমনকি জরুরি পরিষেবাও চালু রাখা হয়নি বলে অভিযোগ রোগীর পরিবারদের। অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালে এ দিন আউটডোর পরিষেবা বন্ধ ছিল বলেও জানা গিয়েছে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।