Durga Puja 2024

পুজোয় খয়রাতি বৃদ্ধি, রাজকোষে বাড়তি চাপে শঙ্কা

জেলার অনেক পুজো কমিটির বাজেট কয়েক লক্ষ টাকার। সেই বিপুল বাজেটের কাছে রাজ্য সরকারের অনুদানের টাকা তেমন কিছুই নয়। তবে ছোট পুজোকমিটিগুলি এই অনুদান বৃদ্ধিকে স্বাগত জানিয়েছে।

Advertisement

সুস্মিত হালদার ও সুদেব দাস

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৪ ০৮:৪৪
Share:

নবান্ন। —ফাইল চিত্র।

দুর্গা পুজো পরিচালনা করতে ক্লাবগুলিকে কয়েক বছর ধরে অনুদান দিয়ে আসছে রাজ্য সরকার। এ বারে তার ব্যতিক্রম হয়নি। পাশাপাশি বেড়েছে অনুদানের পরিমাণ। ১৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে প্রতিটি পুজো পরিচালন কমিটিকে এ বছর দেওয়া হবে ৮৫ হাজার টাকা। তাতে ক্লাবকর্তারা খুশি হলেও রাজকোষে বাড়তি চাপ নিয়েও উদ্বিগ্ন অনেকেই।

Advertisement

জেলার অনেক পুজো কমিটির বাজেট কয়েক লক্ষ টাকার। সেই বিপুল বাজেটের কাছে রাজ্য সরকারের অনুদানের টাকা তেমন কিছুই নয়। তবে ছোট পুজোকমিটিগুলি এই অনুদান বৃদ্ধিকে স্বাগত জানিয়েছে। জেলা পুলিশ-প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়া জেলায় গত বছর প্রায় ২২৫৫টি পুজো কমিটিকে ৭০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছিল। অনুমান, এ বারও একই সংখ্যক পুজো কমিটিকে অনুদান দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, প্রতিটি ক্লাব এ বার ১৫ হাজার টাকা বেশি পাবে। ফলে জেলায় সব মিলিয়ে খরচ হবে ১৯ কোটি টাকারও বেশি। এই বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। কোথা থেকে এই টাকার জোগান আসবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। যদিও জেলার এক পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, পুজোর অনুদানের টাকা দেওয়ার চাপ তাঁদের উপর পড়ার কথা নয়। কারণ পুরো টাকাটাই পাঠায় রাজ্য সরকার। নদিয়ার জেলাশাসক এস অরুণপ্রসাদ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী পুজো প্রতি অনুদানের টাকা রাজ্য সরকার সঠিক সময়েই পাঠিয়ে দেবে। আমরাও সেই বারোয়ারিগুলির হাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাঠিয়ে দেব।’’

নদিয়া জেলায় একাধিক জায়গায় বড় বাজেটের পুজো হয়। সেই তালিকায় রয়েছে কল্যাণীর একাধিক ক্লাব। তাদের মধ্যে অন্যতম লুমিনাস ক্লাব। গত বছর এই পুজোর বাজেট ছিল প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা। ওই পুজো তৃণমূল নেতা অরূপ মুখোপাধ্যায় ওরফে টিঙ্কুর পুজো বলে পরিচিত। বিষয়টি নিয়ে টিঙ্কু বলেন, ‘‘বিগ বাজেটের পুজো হলেও সরকারি অনুদানের পরিমাণ নেহাতই কম নয়। ওই টাকায় আমরা বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচিতে ব্যয় করি। এ বার ১৫ হাজার টাকা বেশি দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। ফলে সামাজিক অনুষ্ঠান ও কর্মসূচিগুলি আরও ভাল করে, বড় করে করতে পারব।’’ কল্যাণী শহরে আরও একটি বিগ বাজেটের পুজো হল রথতলা সর্বজনীন দুর্গাপুজো। গত বছর তাদের বাজেট ছিল প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। পুজো কমিটির সদস্য তথা কল্যাণী শহর তৃণমূলের সভাপতি বিপ্লব দে ওরফে সজল বলেন, ‘‘নিশ্চিত ভাবে এই ৮৫ হাজার টাকা অনুদান ছোট-বড় সব পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে বড় প্রাপ্তি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বড় পুজো কমিটির কাছেও প্রায় এক লক্ষ টাকার কাছাকাছি অনুদান পাওয়াটা
কম নয়।’’

Advertisement

বাদকুল্লায় অন্যতম বিগ বাজেটের পুজো করে অনামী ক্লাব। পুজো কমিটির সম্পাদক হিমাদ্রী পাল বলেন, ‘‘আমরা অনুদানের টাকা মূলত বিভিন্ন সামাজিক কাজ ও সচেতনতামূলক প্রচারের কাজে ব্যবহার করে থাকি। এ বার যে ১৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তা ব্যবহার করে সেই কাজে আরও গতি আনতে পারব।”

কৃষ্ণনগরের অন্যতম পুজো কমিটি বউবাজার বারোয়ারির সম্পাদক অনুপম পাল বলেন, ‘‘আমাদের শহরের প্রধান উৎসব হল জগদ্ধাত্রী পুজো। ওই পুজোতেই আমরা যাবতীয় খরচ করে থাকি। ফলে দুর্গা পুজোর জন্য সে ভাবে চাঁদা তুলতে পারি না। ফলে শুধু আমরাই নয়, কৃষ্ণনগরের প্রতিটি বারোয়ারি এই অনুদানের টাকা পেয়ে চাপ মুক্ত হয়ে পুজোর আয়োজন করতে পারবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement