টিকা নিচ্ছেন ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
করোনার বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াইয়ে যুক্ত না থাকলেও, বর্ধমানে টিকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে রয়েছেন দুই বিধায়ক এবং এক প্রাক্তন বিধায়কও। যদিও, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সাফাই, যাঁরা টিকা নিয়েছেন তাঁরা রোগী কল্যাণ সমিতির সঙ্গে যুক্ত।
শনিবার টিকাকরণের প্রথম দিনই দানা বাঁধল বিতর্ক। এ দিন ভাতারের বর্তমান বিধায়ক সুভাষ মণ্ডলকে দিয়ে টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হয় ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। টিকা নেন প্রাক্তন বিধায়ক বনমালী হাজরা এবং কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়-ও। এ ছাড়াও জেলা পরিষদ এবং পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, রাজ্যের শাসকদলের একাধিক নেতা এ দিন টিকা নেন। কিন্তু তাঁরা কোভিড যোদ্ধা কি না তা নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
এ নিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, ‘‘যে সব জন প্রতিনিধিরা টিকা নিয়েছেন তাঁরা রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য। তাঁরা টিকা পেতেই পারেন।’’ সিএমওএইচ-এর ব্যাখ্যার পরেও অবশ্য বিতর্ক থামছে না। অনেকের পাল্টা প্রশ্ন, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ জহর বাগদি রোগী কল্যাণ সমিতির সঙ্গে জড়িত নন, তিনি টিকা পেলেন কীভাবে?
আরও পড়ুন: ভোটের আগে রদবদল তৃণমূল ছাত্র পরিষদে
আরও পড়ুন: করোনা টিকার আবাহনের দিন বিয়োগ বিসর্জন মনে পড়ছে ওঁদের
তালিকায় নাম থাকা সত্বেও টিকা না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্সিং স্টাফ অনিতা মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘শুক্রবার আমাদের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তার পর নিয়ম মেনে নথিপত্র নিয়ে এসেছিলাম টিকা নিতে। কিন্তু হাসপাতালের তরফে বলা হয়, প্রথম তালিকায় নেই। প্রথমদিন থেকেই আমরা রোগীদের বেড সাইড কেয়ার দিয়ে এসেছি। এখন কী আর করা যাবে!’’অনিতার অভিযোগ নিয়ে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল বলেন,‘‘ওঁদের ডাকা হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু তালিকায় নাম না থাকায় ওদের এ দিন টিকা দেওয়া হয় নি। পরের দিন পাবেন।’’
শনিবার করণদিঘি গ্রামীন হাসপাতালে ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক মনোদেব সিংহ। টিকাকরণও শুরু হয় তাঁকে দিয়েই। তা নিয়েও একইরকম বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্যে নারাজ উত্তর দিনাজপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) কার্তিক চন্দ্র মণ্ডল।
টিকা বিতর্কের মুখে পড়েন আলিপুরদুয়ারের তৃণণূল বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী-ও। টিকা প্রাপকদের তালিকায় তাঁর নাম ‘প্রথম’ স্থানে বলে অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিজেপি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছেও এর ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত তালিকা থেকে বাদ যায় সৌরভের নাম। জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, সৌরভ আলিপুরদুয়ার রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান। তাই তাঁর নাম তালিকায়। সৌরভ অবশ্য নিজে বলছেন, ‘‘আগে সাধারণ মানুষ টিকা নিক, তার পর আমি নেব।’’