State Fisheries Development Corporation

গাপ্পি কিনতে মানা হয়নি নিয়ম, তদন্তের আওতায় মৎস্য নিগম

মৎস্য দফতর সূত্রের দাবি, অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যে মশাবাহিত রোগ নিবারণে গাপ্পি মাছ সরবরাহের জন্য নিগমকে সরকার ২০১৮-২২ সালে ন’কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল!

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৪ ০৭:২৪
Share:

—প্রতীকী ছবি।

২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের বিভিন্ন আয়-ব্যয়ের প্রচুর গরমিল ধরা পড়েছিল। অভিযোগ, ওই সময়ের মধ্যে কোনও প্রকল্পেই টেন্ডার বিধি মানা হয়নি। যা দেখে ‘স্পেশাল অডিট’-এর নির্দেশ দিয়েছিল নবান্ন।

Advertisement

অভিযোগ সেই ‘স্পেশাল অডিট’ চলাকালীন, যাঁরা অডিটের দায়িত্বে ছিলেন তাঁদের ‘সহযোগিতা’ করা হয়নি নিগমের তরফে। যার জন্য ওই অডিট রিপোর্টকে খতিয়ে দেখতে মৎস্য দফতর তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। গত ১ এপ্রিল ওই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করে নতুন কমিটিকে শীঘ্রই রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

রাজ্যের মৎস্য দফতরের সচিব রোশনি সেন রবিবার বলেন, ‘‘মৎস্য উন্নয়ন নিগমে স্পেশ্যাল অডিট যাঁরা করেছিলেন, তাঁদেরই নির্দেশ ছিল, মৎস্য দফতর যেন বিষয়টি ফের পর্যালোচনা করে দেখে। তাই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি ইতিমধ্যে বৈঠকও করেছে। তবে রিপোর্ট এখন জমা পড়েনি।’’

Advertisement

ওই স্পেশাল অডিট রিপোর্টে অনুযায়ী, কোভিডকালে ২০২০-২২ সালে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার আসবাব, এসি, ফ্রিজ, টিভি কিনেছিল মৎস্য উন্নয়ন নিগম। ওই সময়ে নলবন ফুডপার্কের সৌন্দর্যায়ন ও রংবাহারি গাছ লাগাতে বরাদ্দ করা হয়েছিল ১৪ লক্ষ টাকা। অথচ দেখা গিয়েছে, নিগমের কর্মীদের বেতন দীর্ঘদিন ধরে অনিয়মিত। এই আবহে গত পাঁচ বছরে নিগমের বিভিন্ন প্রকল্পে মোটা টাকা খরচে বেনিয়ম ধরা পড়েছে অডিট রিপোর্টে।

মৎস্য দফতর সূত্রের দাবি, অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যে মশাবাহিত রোগ নিবারণে গাপ্পি মাছ সরবরাহের জন্য নিগমকে সরকার ২০১৮-২২ সালে ন’কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল! অভিযোগ, ওই টাকার বেশির ভাগই নয়ছয় হয়েছে। অভিযোগ, একাধিক সংস্থা থেকে গাপ্পি মাছ কেনা হলেও তাদের মাছ বিক্রি সংক্রান্ত বৈধ লাইসেন্সই ছিল না। গাপ্পি কিনতে টেন্ডার প্রক্রিয়াটি অবৈধ ছিল বলে অডিট রিপোর্ট নালিশ করেছে। নিগম সরকারি নির্ধারিত দরে গাপ্পি কেনার পরিবর্তে অত্যধিক বেশি দরে বাজার থেকে গাপ্পি কিনেছিল বলেও অভিযোগ উঠেছিল। যাঁরা অডিট করছিলেন, সেই আধিকারিকদের অভিযোগ ছিল, অডিটের শুরুতে নিগম গাপ্পি মাছ কেনা সংক্রান্ত অ্যাকাউন্টস বুক, নথি কিছুই দেয়নি।

অডিট রিপোর্টে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, নিগমের বিভিন্ন জলাশয়ে মাছের চারা ছাড়া, পরিকাঠামো উন্নয়নে ন’টি সংস্থাকে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এই সমস্ত সংস্থার মাছ কেনা-বেচা সংক্রান্ত ট্রেড লাইসেন্সই ছিল না।

নিগমের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘স্পেশাল অডিটের সময়ে নিগমের তরফে সহয়োগিতা করা হয়নি। এটা গুরুতর অভিযোগ। যার জন্য বিভাগের তরফে পুনরায় কমিটি গঠন করে তদন্ত করতে বলা হয়েছে।।’’ ঘটনার সময়ে নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে রবিবার তাঁকে ফোন, হোয়াটসঅ্যাপ করলেও জবাব মেলেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement