ফাইল ছবি
ওড়ার যেমন নানান নিয়ম আছে, এক শহর থেকে অন্য শহরে উড়তে গেলে তেমনই বিশেষ কিছু তথ্য না-পেলেই নয়। পাইলটদের এত দিন সেই সব তথ্য সংগ্রহের জন্য পৃথক পৃথক পরিষেবা প্রদানকারীর মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হত। এ বার এক ছাতার তলায় যাবতীয় তথ্য সরবরাহের ব্যবস্থা হচ্ছে। গন্তব্যের রানওয়ের আয়তন কত, সেখানকার আবহাওয়া কেমন, সেই রাজ্যে কোভিড বিধি কী, সেখানে যেতে হলে কোন রুট ধরতে হবে, সেই রুটে সর্বাধিক কতটা উচ্চতায় ওড়া যাবে ইত্যাদি তথ্য পাওয়া যাবে মাত্র একটি ‘ক্লিক’-এই।
এখন বিভিন্ন পরিষেবা প্রদানকারীর কাছ থেকে উড়ান সংস্থাগুলিকে এই সব তথ্য জোগাড় করতে হয়। সেই সব পরিষেবা প্রদানকারীর মধ্যে আছে বিভিন্ন রাজ্য সরকার, রয়েছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। আবহাওয়া দফতরের সঙ্গে রয়েছে দিল্লি, মুম্বইয়ের মতো বেসরকারি বিমানবন্দর। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কর্তা, এয়ার ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্টের এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর কল্যাণ চৌধুরী বলেন, ‘‘এ বার থেকে উড়ানের জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় তথ্য একটি ছাতার তলায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এক ক্লিকেই পাওয়া যাবে এই সব জরুরি তথ্য।’’
বেসরকারি উড়ান সংস্থার পাইলট ক্যাপ্টেন সর্বেশ গুপ্তের কথায়, ‘‘প্রতিটি উড়ান সংস্থায় ফ্লাইট ডেসপ্যাচ নামে একটি বিভাগ রয়েছে। সেই বিভাগই বিভিন্ন তথ্য জোগাড় করে তা পাইলটদের হাতে তুলে দেয়। ফলে নতুন ব্যবস্থায় মূলত সুবিধা হবে তাদেরই।’’ নির্ধারিত যাত্রিবাহী উড়ান ছাড়াও ভাড়া করা বিমান, বেসরকারি সংস্থা অথবা ব্যক্তিগত বিমানের পাইলটদেরও এই সব তথ্যের জন্য একের পর এক পরিষেবা প্রদানকারীর মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হত। ‘‘নতুন ব্যবস্থায় তাঁদের খুব সুবিধা হবে,’’ বলছেন সর্বেশবাবু।
কল্যাণবাবু জানান, যারা বিশ্বের উড়ান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে, সেই ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজ়েশন (আইকাও)-এর নির্দেশ অনুযায়ী আগামী ২৭ জানুয়ারি নতুন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। তবে গত ১৬ ডিসেম্বরেই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের অ্যারোনটিক্যাল ইনফর্মেশন পাবলিকেশন (এআইপি)-এ এই সব তথ্য চলে এসেছে। ফলে চাইলে এখনই এই সব তথ্য পাওয়া যাবে। এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ টুইট করে সে-কথা জানিয়েও দিয়েছেন।
কল্যাণবাবু বলেন, ‘‘দশ বছর ধরে আমরা এই কাজ করে চলেছি। লক্ষ লক্ষ তথ্য আসে আমাদের কাছে। সেই সব তথ্য আমরাই আপলোডকরি। কিন্তু এত দিন সেগুলিকে এক ছাতার তলায় আনা যাচ্ছিল না। আজকের বিমান পরিবহণে এই সব তথ্য অত্যন্ত জরুরি। বিমানের ফ্লাইট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে তা আপলোড করতে হয়। টেক-অফের কিছু ক্ষণের মধ্যেই এই তথ্যের সাহায্যে অটো পাইলট মোডে চলে যায় বিমান। তথ্যের সাহায্যে স্বয়ংক্রিয় ভাবে উড়তে পারে সে।’’
এক পাইলট বলেন, ‘‘এই সব তথ্য এক জায়গায় জোগাড় করতে এখন ডেসপ্যাচ বিভাগের কর্মীদের প্রচণ্ড দৌড়োদৌড়ি করতে হয়। ভোরে সব জোগাড় করে কাগজের তাড়া তুলে দেওয়া হয় আমাদের হাতে। সেটা এক ক্লিকে পেলে তো দারুণ ব্যাপার!’’