ফাইল চিত্র।
করোনা আবহে বিভিন্ন হাসপাতালে অন্যান্য রোগে পীড়িতদের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় রোগীদের হয়রানি রুখতে বেসরকারি হাসপাতালগুলির উদ্দেশ্যে ‘অ্যাডভাইসরি’ বা পরামর্শ-নির্দেশিকা দেওয়া হচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার নবান্নে জানান। নিয়মিত করোনা-তথ্য পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন।
মঙ্গলবার নবান্নে সাতটি চিকিৎসক সংগঠনের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে রোগীদের হয়রানির বিষয়টি ওঠে। বৈঠক শেষে মুখ্যসচিব বলেছিলেন, বেসরকারি হাসপাতাল যাতে রোগী না-ফেরায়, সেই জন্য সরকার ফের নির্দেশিকা দেবে। সেই সুর বজায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘শুধু করোনা নিয়ে চললে হবে না। শিশুদের টিকাকরণ, কিডনি রোগীদের ডায়ালিসিস, হৃদ্রোগী, গর্ভবতীদেরও তো দেখতে হবে। সুতরাং বেসরকারি ক্ষেত্রকেও বলছি, আমরা অ্যাডভাইসরি দিচ্ছি, তারা হাসপাতালগুলো যেন পুরোপুরি চালু রাখে এবং রোগীদের ফিরিয়ে না-দেয়। সরকার করোনা চিকিৎসার জন্য ৫১টা বেসরকারি হাসপাতাল নিয়েছে। সেখানে করোনা চিকিৎসার খরচ সরকারই দিচ্ছে। বাকি বেসরকারি হাসপাতালগুলো নিজেদের মতো করে চিকিৎসা করুন সুরক্ষা নিয়ে। চিকিৎসা কেন বন্ধ করে দিচ্ছেন!’’
একই সঙ্গে বিভিন্ন পাড়ায় যে-সব চিকিৎসক চেম্বার বন্ধ রেখেছেন, তাঁদের পরিষেবা চালু করার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘যাঁরা পারবেন, সুরক্ষা নিয়ে অল্প অল্প কেস করতে শুরু করুন, এক বারে ভিড় না-বাড়িয়ে। লকডাউন বিধি মেনে কাজ করুন।’’
আরও পড়ুন: বিকল্প পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা শুরু রাজ্যে
এ দিকে, বেসরকারি করোনা হাসপাতালগুলির কাছ থেকে দৈনিক তথ্য চেয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। সরকারি সূত্রের দাবি, প্রতিটি হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য ক’টি আইসোলেশন বেড রয়েছে, দৈনিক ক’জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন, কত রোগী আগেই ভর্তি হয়েছেন, ক’জন রোগীকে হাসপাতাল থেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে, ক’জন ছাড়া পেয়েছেন, ক’জন মারা গিয়েছেন এবং মোট ক’জন রোগী রয়েছেন, তা জানাতে হবে। সরকারি সূত্রের দাবি, বেসরকারি করোনা হাসপাতালগুলি এই তথ্য জানাতে বাধ্য। কারণ, এই বিষয়টির সঙ্গে ‘ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট অ্যাক্ট’ অনুযায়ী হাসপাতালের লাইসেন্সের শর্ত জুড়ে রয়েছে। ফলে হাসপাতাল তথ্য না-দিলে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে ওই তথ্য ই-মেল মারফত স্বাস্থ্য ভবনে পাঠিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
আমরি গ্রুপের সিইও রূপক বড়ুয়া বলেন, ‘‘কেউ যদি করোনা-তথ্য নিয়মিত না-পাঠান, সেটা ঠিক হবে না। কোন হাসপাতালে কত শয্যা রয়েছে, তা জানার জন্য এই পরিসংখ্যান জরুরি। স্বাস্থ্য ভবনও সেই অনুযায়ী রোগীদের পাঠাতে পারে।’’ পিয়ারলেসের সিইও সুদীপ্ত মিত্র বলেন, ‘‘এই তথ্য আগেও পাঠানো হত। এখন শুধু পদ্ধতিটা বদলাল। তাতে অসুবিধা নেই।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)