শ্রদ্ধাজ্ঞাপন: তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী। ছবি: নারায়ণ দে
বিধায়ক অনিল অধিকারীর মৃত্যু যেন ভুলিয়ে দিল যাবতীয় রাজনৈতিক বিভেদ। শুক্রবার একযোগে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গেই ফালাকাটার প্রয়াত বিধায়ককে শ্রদ্ধা জানালেন বিজেপি, কংগ্রেস ও বাম নেতারা। সেইসঙ্গে বিধায়কের শেষ যাত্রায় ভিড় জমালেন প্রচুর মানুষও।
প্রায় এক বছর ধরে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই চালানোর পর বৃহস্পতিবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয় তৃণমূল বিধায়ক অনিল অধিকারীর। ফালাকাটার বিধায়কের মৃত্যুর পর ওই দিনই তৃণমূলের মন্ত্রী-নেতাদের পাশাপাশি শোক প্রকাশ করেছিলেন বিজেপি, কংগ্রেস ও বাম নেতারা। শুক্রবার বিধায়কের দেহ ফালাকাটার তৃণমূল পার্টি অফিসের সামনে আসার পর রাজনৈতিক বিভেদকে দূরে সরিয়ে তৃণমূলের মন্ত্রী-নেতাদের সঙ্গে তাকে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা যায় বিধানসভার বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গা, কংগ্রেসের জেলা সভাপতি গজেন্দ্রনাথ বর্মণ, সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃণালকান্তি রায়দের। বিভিন্ন দলের নেতাদের কেউ কেউ বিধায়কের শেষ যাত্রাতেও সামিল হন।
তৃণমূল সূত্রের খবর, মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার বিকেলে একটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে বিধায়কের দেহ কলকাতা থেকে ফালাকাটার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। গোটা রাস্তাতেই সেই অ্যাম্বুল্যান্সের সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বীরপাড়া চৌপথীতে পৌঁছয় বিধায়কের দেহ। সেখানে তাঁর দেহ শববাহী গাড়িতে নিয়ে ফালাকাটার উদ্দেশে রওনা হন আলিপুরদুয়ার জেলার তৃণমূল নেতারা। মাঝে একাধিক চা বাগান ও পার্টি অফিসের সামনে গাড়ি দাঁড় করাতে হয়। বেলা পৌনে এগারোটা নাগাদ তৃণমূলের ফালাকাটা ব্লক পার্টি অফিসের সামনের মাঠে বিধায়কের দেহ পৌঁছায়। সেখানেই তৈরি একটি মঞ্চে দেহ রাখা হয়। ততক্ষণে সেখানে রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব সহ আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলার তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা পৌঁছে গিয়েছিলেন। সকলে একে একে শ্রদ্ধা জানান। প্রশাসনের তরফে জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মীনা ও পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীও বিধায়ককে শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধাজ্ঞাপন: সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃণালকান্তি রায়। ছবি: নারায়ণ দে
সকলে শ্রদ্ধা জানানোর পর তৃণমূলের নেতারা বিধায়কের দেহ নিয়ে পশ্চিম ফালাকাটায় তাঁর বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। ততক্ষণে সেখানে প্রচুর মানুষের ভিড় জমে গিয়েছে। এলাকার একটি স্কুলের মাঠ ছুঁয়ে বিধায়কের দেহ তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও প্রচুর মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। এরপর বাড়ির কাছেই মুজনাই নদীর ধারে বিধায়কের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
ওই আসনে প্রার্থী কে হবেন তা নিয়ে গুঞ্জনও শুরু হয়েছে এলাকায়। তবে তৃণমূল বা বিজেপি কোনও দলই এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ।