মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
জঙ্গলমহলের একাংশে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) প্রভাব বাড়ছে, সম্প্রতি সেই ইঙ্গিত মিলেছে। এই আবহে পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া— এই তিন জেলায় প্রশাসনিক সভা করতে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বিকেলেই তিনি পৌঁছে যান মেদিনীপুর শহরে। তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রশাসনিক সভা হলেও পঞ্চায়েত ভোটের আগে এখান থেকে রাজনৈতিক দিশা মিলতে পারে। সঙ্ঘের বাড়বৃদ্ধি নিয়ে মমতা কী বার্তা দেন, সে দিকেও নজর রাখবেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
তিন জেলায় অবশ্য এক দিনে সভা হচ্ছে না। আজ, বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুর ও পুরুলিয়ায় সভা। পরের দিন, শুক্রবার সভা রয়েছে বাঁকুড়ায়। মেদিনীপুর শহরের কলেজ-কলেজিয়েট স্কুল মাঠে হবে সভা। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের পরিষেবা দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও পরিষেবা প্রদান করবেন। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে জেলায় যে সব উপভোক্তা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে থেকে প্রায় ৭০ হাজার জনকে এই সভায় হাজির করানো হবে। আগে এই জেলায় সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী আরএসএস-এর কাজকর্মের উপরে নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে, এই জেলায় সঙ্ঘের নানা নিরিখে সংগঠনের শ্রীবৃদ্ধি হয়েছে। ফলে কার্যক্ষেত্রে বিজেপির লাভ হওয়ারই সম্ভাবনা প্রবল। তাই বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কিছু বলেন কি না, সে দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। মমতার সফরকে কটাক্ষ করে বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি শমিত দাশ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বারবার দাবি করেন, জঙ্গলমহল হাসছে। অথচ, জঙ্গলমহলের লোকেরা বলছেন, তাঁদের উন্নতি হয়নি। কিছুই পাননি।’’
বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরের সভা সেরে দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর পুরুলিয়া ২ ব্লকের হুটমুড়ায় প্রশাসনিক সভায় উপভোক্তাদের সুবিধা প্রদান করার কথা। পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘সভায় আসার জন্য প্রতিটি ব্লক থেকেই কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও আগ্রহী। দলের তরফে কিছু গাড়ির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, তারা বিভিন্ন প্রকল্পের প্রায় ৪০ হাজার উপভোক্তাকে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।
পুরুলিয়া জেলার ৯টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে তিনটিতে জিতেছে তৃণমূল। ছ’টি বিজেপির দখলে। বাঁকুড়া জেলার ১২টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে চারটিতে জেতে তৃণমূল, আটটি বিজেপির দখলে। দলের অনুমান, পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলনেত্রীর হয়তো এটাই জেলায় শেষ প্রশাসনিক সভা। কারণ পরীক্ষার মরসুমে প্রচারের সময় হাতে না-ও থাকতে পারে।