Manik Bhattacharya

‘হুমকি’ দিয়ে চুক্তি করিয়েও কি আয় মানিকের

ইডি সূত্রের খবর, তাপসের বয়ান অনুযায়ী সংগঠনের সভাপতি হিসেবে ওই চুক্তিপত্রও তাঁকে দেওয়া হয়নি। উল্টে মানিক তা নিজের কাছে রেখেছিলেন।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:২৭
Share:

প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র।

অতিমারি পরিস্থিতিতে বেসরকারি বিএড ও ডিইএলএড কলেজে অনলাইন পড়াশোনার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের নির্দেশে তাঁর ছেলের সংস্থার সঙ্গে অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভার্স অ্যাসোসিয়েশনের চুক্তি হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠল। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সূত্রের দাবি, ওই সংগঠনের সভাপতি তাপস মণ্ডল তদন্তকারীদের জানিয়েছেন যে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিকের নির্দেশেই কার্যত ওই চুক্তি করতে বাধ্য হয়েছিলেন তাঁরা। এই দাবির কথা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে মানিকের বিরুদ্ধে জমা দেওয়া চার্জশিটেও উল্লেখকরেছে ইডি।

Advertisement

ইডি সূত্রের খবর, তাপসের বয়ান অনুযায়ী সংগঠনের সভাপতি হিসেবে ওই চুক্তিপত্রও তাঁকে দেওয়া হয়নি। উল্টে মানিক তা নিজের কাছে রেখেছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী রাজ্যের ৬৫৪টি কলেজ থেকে অ্যাসোসিয়েশনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েছিল। ওই অ্যাকাউন্ট থেকে মানিকের ছেলের দু’টি সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা জমা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, মানিকের ছেলের সংস্থার অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে ওই পাঁচ কোটি টাকার উৎস নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন তদন্তকারীরা।

তদন্তকারীদের দাবি, প্রাথমিকে বেআইনি নিয়োগের পাশাপাশি নিজের পদমর্যাদাকে কাজে লাগিয়ে কার্যত হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করেছিলেন মানিক। তবে সরাসরি যাতে তাঁর নাম না-জড়ায়, তাই ছেলের সংস্থার মাধ্যমে ওই টাকা নেওয়া হয়েছিল। ইডি সূত্রের দাবি, বেসরকারি ডিইএলএড কলেজে ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে মাথাপিছু পাঁচ হাজার টাকা করে নিয়েছিলেন মানিক। ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তাপস মারফত প্রায় ২০ কোটি টাকারও বেশি তিনি নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তাপসের বয়ানের ভিত্তিতে তদন্তকারীদের দাবি, মানিক ওই টাকা তাপসের কাছ থেকে নগদে নিয়েছিলেন।

Advertisement

তদন্তকারীদের দাবি, টাকা নেওয়ার জন্য তাপসকে ফোন করে সংগঠনের সল্টলেকের মহিষবাথানের অফিসে লোক পাঠাতেন মানিক। এর থেকে সন্দেহ করা হচ্ছে, লোক মারফত টাকা নিলে মানিকের কোনও যোগসূত্র থাকত না। উপরন্তু, প্রতি বার পৃথক-পৃথক লোক পাঠানোর ফলে মোট কত টাকা মানিকের কাছে পৌঁছচ্ছে, তা-ও ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা ছিল না। একই ভাবে সংগঠনের কাছ থেকে নগদে টাকা নিলে তারও কোনও কাগুজে প্রমাণ থাকত না।

যদিও ইডি সূত্রের দাবি, এমন কৌশলের পরেও দুর্নীতির তদন্তে মানিকের শেষরক্ষা হয়নি। তাঁর এবং পরিবারের সদস্যদের বহু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং সম্পত্তির হদিস মিলেছে। এ ছাড়াও, কার্যত ঋণ দেওয়ার নাম করে আত্মীয়-পরিজনদের কাছেও টাকা সরিয়েছেন মানিক। তাঁদের বয়ানও নথিবদ্ধ করেছে ইডি এবং তা চার্জশিটে উল্লেখ করেছেন তদন্তকারীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement