বর্তমান স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি সংগৃহীত।
চলতি মাসের শেষ দিনে অবসর নেবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। পরবর্তী মুখ্যসচিব হিসেবে সরকার কাকে বেছে নেবে, তা নিয়ে প্রশাসনিক মহলে প্রবল জল্পনা শুরু হয়েছে। কয়েকটি মহলের ধারণা, সব ঠিক থাকলে বর্তমান স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ই ওই পদে বসবেন। যদি সেটা হয়, তা হলে আগামী বছরের মে মাস পর্যন্ত মুখ্যসচিব পদে থাকবেন ১৯৮৭-র ব্যাচের আইএএস অফিসার আলাপন। রাজ্যে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব পদে কর্মরত আমলাদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে সিনিয়র। প্রসঙ্গত, সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী বছর মে মাসের মধ্যে বিধানসভা ভোটও মিটে যাওয়ার কথা।
চাকরি জীবনের শুরুতে মহকুমাশাসক, আন্ডার সেক্রেটারি এবং একাধিক জেলার জেলাশাসক হিসেবে কাজ করেছিলেন আলাপন। কলকাতা পুরসভার কমিশনার ছাড়াও পুর, পরিবহণ, শিল্প, এসএসএমই-এর মতো দফতরে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। এখন স্বরাষ্ট্রের সঙ্গে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরেরও দায়িত্বভার সামলাচ্ছেন আলাপনবাবু। বর্তমান সরকারের সময় কিছু দিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বও সামলেছিলেন তিনি। প্রশাসনের অন্দরের ব্যাখ্যা, দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং সরকারকে বহু বার নানা সমস্যা থেকে বার করে আনার সুবাদে পরবর্তী মুখ্যসচিব পদের অন্যতম দাবিদার তিনিই।
মুখ্যসচিব পদের সঙ্গে আরও কয়েকটি পদে বদল ঘটাতে হবে সরকারকে। তার অন্যতম স্বরাষ্ট্র দফতর। আগামী বছর বিধানসভা ভোটের সময়ে স্বরাষ্ট্রসচিব হিসেবে সরকার কাকে বেছে নেবে, তা নিয়ে প্রশাসনিক অলিন্দে যথেষ্ট গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। অভিজ্ঞ আমলাদের অনেকের ধারণা, পরবর্তী স্বরাষ্ট্রসচিব হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন রাজ্যের বর্তমান কৃষিসচিব সুনীল গুপ্ত। কারণ, ১৯৮৭-র ব্যাচের আইএএস অফিসার সুনীল গুপ্ত দীর্ঘদিন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) হিসেবে কাজ করেছেন। ফলে কমিশনের কাজকর্ম এবং সরকারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সমন্বয়ের বিষয়টি তাঁর নখদর্পণে। তাই নির্বাচনের আগে তাঁর সেই অভিজ্ঞতা সরকার কাজে লাগাতে চাইবে। উল্লেখ্য, ২০১৯-এর লোকসভা ভোট চলাকালীনই স্বরাষ্ট্রসচিব পদ থেকে অত্রি ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দেয় কমিশন। ফলে অফিসার নির্বাচনের ব্যাপারে এ বার বাড়তি সতর্ক থাকতে হচ্ছে রাজ্য প্রশাসনকে।
আরও পড়ুন: সংসার টানতেই এই রাজ্য ছেড়ে ফের পাড়ি দিচ্ছেন ওঁরা
সুনীল গুপ্ত ছাড়াও ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সচিব মনোজ পন্থের নাম প্রশাসনিক মহলে ঘোরাফেরা করছে। যদিও ১৯৯১-এর ব্যাচের মনোজ পন্থ তুলনায় বেশ জুনিয়র অফিসার। এর পাশাপাশি উঠে আসছে অর্থসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর নামও। তিনি ১৯৮৮-র ব্যাচের আইএএস অফিসার। তবে প্রশাসনিক অলিন্দে যা-ই জল্পনা থাক, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।
আরও পড়ুন: ছাড়পত্রের গেরোয় ভারতে আটকে অক্সফোর্ডের টিকা