আলাপন বন্দ্যোপাধ্য়ায় মামলার রায় ঘোষণা সুপ্রিম কোর্টের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মামলা স্থানান্তর নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে জয় পেয়েছিলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার সেই রায় খারিজ করে দিয়ে এ বিষয়ে ‘ক্যাট’(সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল)-এর দিল্লির প্রিন্সিপাল বেঞ্চের রায় নির্দেশেই সম্মতি দিয়েছে। ফলে এই মামলার শুনানি এ বার হবে দিল্লিতেই।
শীর্ষ আদালত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের রায় খারিজ করে বলেছে, ‘ক্যাট’-এর দিল্লির প্রিন্সিপাল বেঞ্চের কোনও সিদ্ধান্ত বাতিল করতে পারে না কলকাতা হাই কোর্টের মতো অন্য রাজ্যের আঞ্চলিক আদালত। পাশাপাশি বিচারপতি সি টি রবিকুমার জানিয়েছেন, চাইলে ‘সংশ্লিষ্ট রাজ্যের আদালতে’ (দিল্লি হাই কোর্টে) ‘ক্যাট’-এর দিল্লির প্রিন্সিপাল বেঞ্চের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করতে পারেন আলাপন। তবে আলাপন মামলার শুনানি কলকাতায় হবে না কি দিল্লিতে, সে বিষয়ে প্রাথমিক ভাবে ‘ক্যাট’-এর কলকাতা বেঞ্চকে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
অবসরের ঠিক আগে তাঁর কার্যকালের মেয়াদ সাময়িক বৃদ্ধি করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু বর্ধিত সময়সীমা পর্যন্ত কাজ করেননি আলাপন, বরং নির্দিষ্ট দিনেই (৩১ মে, ২০২১) পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব পদ থেকে অবসর নেন তিনি। এর পর আলাপনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তুলে তদন্ত শুরু করেছিল কেন্দ্রের কর্মিবর্গ মন্ত্রক।
ওই তদন্ত খারিজের দাবিতে ক্যাট-এর কলকাতা বেঞ্চের দ্বারস্থ হন আলাপন। সঙ্গে জানিয়েছিলেন, অবসরপ্রাপ্ত কর্মী হিসেবে তাঁর যে সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য, তা তিনি পাচ্ছেন না। কিন্তু সেখানে কোনও স্থায়ী সমাধান হওয়ার আগে ২২ অক্টোবর মামলাটি দিল্লিতে স্থানান্তর হয়ে যায়। কলকাতা থেকে সরিয়ে দিল্লিতে শুনানি করার ক্যাট-এর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন আলাপন। তাঁর আবেদনে সম্মতি দিয়ে গত ২৯ অক্টোবর বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের অবসরকালীন ডিভিশন বেঞ্চ ক্যাট-এর শুনানি দিল্লিতে স্থানান্তরের সিদ্ধান্তকে খারিজ করে দেয়।
কলকাতা হাই কোর্টের এই রায়কে ‘এক্তিয়ার বহির্ভূত’ বলে অভিযোগ করে সুপ্রিম আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। গত ২৯ নভেম্বর বিচারপতি এএম খানউইলকর এবং বিচারপতি সি টি রবিকুমারের ডিভিশন বেঞ্চ শুনানি শেষ হয়। শুনানিতে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, আলাপন ‘ক্যাট’-এর কোনও রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে যাননি। তিনি স্থানান্তরের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। যা করা যায় না। ‘ক্যাট’-এর প্রিন্সিপাল বেঞ্চের চেয়ারম্যানের আইনি ক্ষমতা রয়েছে কোনও মামলা স্থানান্তরের। এ ক্ষেত্রেও তা প্রয়োগ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সেই যুক্তিতে আংশিক সায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে আলাপনের সমানে দিল্লি হাই কোর্টে আবেদনের রাস্তাও খোলা রয়েছে।