Akhil Giri Comment

মুখ্যসচিবকে ইস্তফাপত্র হোয়াটসঅ্যাপে পাঠালেন অখিল! পরে বিধানসভাতেও গেলেন

বনদফতরের এক মহিলা আধিকারিককে কুকথা বলার ঘটনায় তৃণমূলের তরফে অখিল গিরিকে কারামন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলা হয়। অখিল জানিয়েছিলেন, ইস্তফাপত্রটি তিনি সোমবার বিধানসভায় এসে জমা দেবেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৪ ১২:২৭
Share:

অখিল গিরি। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

কথা ছিল, কাঁথি থেকে কলকাতায় এসে সোমবার বিধানসভা ভবনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তাঁর ইস্তফাপত্র তুলে দেবেন অখিল গিরি। কিন্তু রাজ্য প্রশাসনের তরফে তাঁকে সেই ইস্তফাপত্র মুখ্যসচিবকে হোয়াট্‌সঅ্যাপে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। অখিল সেই মতোই কাজ করেছেন। যা থেকে স্পষ্ট যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা অখিলের সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাৎও চাইছেন না।

Advertisement

সোমবার সকালে এমএলএ হস্টেল থেকে রওনা হয়েও গাড়ির মুখ ঘুরিয়ে আবার অখিল ফিরে যান। সেখান থেকেই ইস্তফাপত্রটি হোয়াট্‌সঅ্যাপে ছবি তুলে পাঠিয়ে দেন রাজ্যের মুখ্যসচিবের দফতরে। কারণ, মুখ্যসচিব তাঁকে ফোনে তেমনই নির্দেশ দিয়েছিলেন। ইস্তফাপত্র পাঠানোর পরে বেরিয়ে অখিল জানান, তিনি বিধানসভায় যাচ্ছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দেখা হবে না। বন দফতরের বিরুদ্ধে তাঁর যা অভিযোগ, তা তিনি পরে লিখিত ভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন। তবে অখিল আগেই জানিয়েছেন, ২০২৬ সাল পর্যন্ত তিনি বিধায়ক রয়েছেন। তিনি নিজের কেন্দ্র রামনগরে বিধায়ক হিসাবে কাজ করবেন।

বন দফতরের এক মহিলা আধিকারিককে কুকথা বলার ঘটনায় রবিবারই তৃণমূলের তরফে অখিলকে মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিতে বলা হয়। অখিল দলের সেই নির্দেশ মেনেও নেন। রবিবারই কাঁথিতে বসে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে অখিল জানিয়েছিলেন, তাঁর ইস্তফার বয়ান লেখা হয়ে গিয়েছে। সেটি তিনি ইমেলে পাঠিয়ে দেবেন। কাগজে লেখা ইস্তফাপত্রটি সোমবার কলকাতায় এসে জমা দেবেন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। কয়েক ঘণ্টা পরেই কাঁথি থেকে কলকাতার এমএলএ হস্টেলে চলে আসেন অখিল। সোমবার সকালে পদত্যাগপত্রটি নিয়ে গাড়িতে রওনা হন সেখান থেকেই। কিন্তু কিছু দূর যাওয়ার পরেই থমকে যায় অখিলের গাড়ি। দেখা যায় গাড়িতে বসেই পদত্যাগপত্রে সই করছেন অখিল। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের অখিল বলেন, ‘‘মুখ্যসচিব ফোন করেছিলেন। উনি বলেছেন পদত্যাগপত্রটি ওঁকেই হোয়াট্‌সঅ্যাপে পাঠিয়ে দিতে এবং হার্ডকপি পরে জমা দিতে। সেটাই করব।’’

Advertisement

অখিল সোমবার আরও একবার জানান, তিনি মহিলা আধিকারিকের বিরুদ্ধে যে শব্দ প্রয়োগ করেছেন, তা নিয়ে তিনি অনুতপ্ত। কিন্তু যে বিষয়ে বলেছিলেন, তা নিয়ে তাঁর কোনও অনুতাপ নেই। অখিল বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইতে পারি। কোনও আধিকারিকের কাছে চাইব না!’’

তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, দল কি তাঁর সঙ্গে কঠোর আচরণ করছে বলে তিনি মনে করেন? জবাবে অখিল জানিয়ে দেন, দল যা নির্দেশ দিয়েছে তা তিনি মেনে নিয়েছেন। কিন্তু দল তো তাঁকে বন দফতরের মহিলা আধিকারিকের কাছে ক্ষমা চাইতেও বলেছে, সেই নির্দেশ কি তিনি মানবেন? জবাবে অখিল বলেন, ‘‘আমি কারও কাছে ক্ষমা চাইব না।’’ অখিলের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তবে কি তিনি দলের সংগঠনের কাজ করবেন? উত্তর আসে, ‘‘আমি তো মন্ত্রিপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি এখনও তো বিধায়ক। রামনগরের জনপ্রতিনিধি। একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে সেখানকার কাজ করব।’’ তিনি কি বিধানসভায় যাবেন? অখিল তখন ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কোনও উত্তর দেননি। তবে গান্ধীমূর্তির পাদদেশের কাছ থেকে এমএলএ হস্টেলের পথে চলে যায় তাঁর গাড়ি। পরে আবার বেরিয়ে অখিল জানান, তিনি বিধানসভায় যাচ্ছেন। তবে তা ‘সাধারণ সদস্য’ হিসাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement