কোচবিহার বিমানবন্দরের লাইসেন্স বাতিলের প্রস্তাব

কোচবিহার বিমানবন্দর থেকে উড়ানের চেষ্টা আগেও হয়েছে। ২০০৫-এ উদ্যোগী হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। লাইসেন্স আসে ২০০৯ সালে। তখন রাজ্যের সঙ্গে চুক্তি করে ডেকান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা বিমান চালায়নি।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:১৯
Share:

কোচবিহার বিমানবন্দর।—ফাইল চিত্র।

লোকসভা ভোটের প্রচারে কোচবিহার বিমানবন্দর চালু করার আশ্বাস দিয়েছিলেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। এ বার সেই বিমানবন্দরটির লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করলেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (এএআই)। ডিরেক্টরেট অব সিভিল এভিয়েশনের কাছে পাঠানো আবেদনে তাঁরা অর্থের অপচয়কেই মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যে বিমানবন্দর থেকে কোনও উড়ান নেই, তার লাইসেন্স রাখতে বছরে গলে যাচ্ছে কোটি টাকা।

Advertisement

কর্তৃপক্ষের এক কর্তার কথায়, ‘‘কেন্দ্রের উড়ান প্রকল্পের অধীনে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সহযোগিতায় ছোট ছোট বিমানবন্দর তৈরি হচ্ছে। সেখানে লোক দরকার। যে সব বিমানবন্দরে একটি উড়ানও নেই, সেগুলি বন্ধ করে কর্মীদের সরানো হচ্ছে। জগদলপুর, রৌরকেল্লা থেকে এর মধ্যেই লোক তুলে নেওয়া হয়েছে।’’ কোচবিহারের ১২০০ মিটার রানওয়েতে বড়জোর ২০ আসনের বিমান নামাওঠা করতে পারে। যে ধরনের বিমান কোচবিহারে নামতে সক্ষম, দেশের কোনও সংস্থাই নিয়মিত তেমন বিমান চালায় না।

কোচবিহার বিমানবন্দর থেকে উড়ানের চেষ্টা আগেও হয়েছে। ২০০৫-এ উদ্যোগী হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। লাইসেন্স আসে ২০০৯ সালে। তখন রাজ্যের সঙ্গে চুক্তি করে ডেকান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা বিমান চালায়নি। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উড়ান চালু করেন। কিন্তু তিন মাসের মধ্যে সেই উড়ান বন্ধ হয়ে যায়। এ বছরের ২৭ জুলাই কোচবিহারে বিমান নিয়ে নেমে বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক জানান, ১ অগস্ট থেকে এখানে নিয়মিত বিমান চলবে। এর পরেই রাজ্য সরকার বিমানবন্দরটির নিরাপত্তা ও দমকল পরিষেবা তুলে নেয়। ১৫ অগস্ট ফের নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, দমকল কর্মী এখনও কলকাতা, প্যাকিয়ং এবং ভুবনেশ্বর থেকেই নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করলেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, কোচবিহারে এক জন অধিকর্তা, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল চালানোর জন্য দু’জন অফিসার রয়েছেন। বিমানবন্দর পাহারার জন্য বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করা রয়েছে। এঁদের বেতন এবং বিমানবন্দরের লাইসেন্স ফি হিসেবে বছরে দেড় কোটি টাকারও বেশি খরচ হচ্ছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের রিজিওনাল এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর এস পি যাদব জানান, সাময়িক ভাবে লাইসেন্স বাতিলের আবেদন করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘হতে পারে, আগামী দিনে কেউ কোচবিহার থেকে উড়ান চালাতে আগ্রহ প্রকাশ করল। তখন ফের লাইসেন্স চাওয়া হবে।’’

নিশীথবাবু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার অসহযোগিতা না করলে বিমান চলাচল শুরু হয়ে যেত।’’ প্রাক্তন সাংসদ তথা তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের বক্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকার দীর্ঘদিন ধরে বিমানবন্দর চালুর চেষ্টা করছে। কেন্দ্রের সহযোগিতা না পাওয়ার জন্যেই তা সম্ভব হয়নি।’’

(সহ-প্রতিবেদন: নমিতেশ ঘোষ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement