ছবি: সংগৃহীত
বন্ধ হয়ে থাকা ছ’টি শহরের সরাসরি উড়ান এবং বিদেশ থেকে আসা ‘বন্দে ভারত’-এর উড়ান চালু করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানাল উড়ান সংস্থাগুলি। একই আর্জি জানানো হয়েছে ট্র্যাভেল এজেন্টদের তরফেও।
আপাতত কলকাতা থেকে দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, আমদাবাদ, নাগপুর ও পুণের সরাসরি উড়ান বন্ধ। এই নিষেধাজ্ঞা রয়েছ ৩১ অগস্ট পর্যন্ত। তবে সরাসরি উড়ান না-থাকলেও বহু যাত্রী নিয়মিত অন্য শহর ঘুরে কলকাতায় যাতায়াত করছেন।
অন্য দিকে, বিদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বন্দে ভারত-এর যে উড়ান চলছে, তার যাত্রীরাও কলকাতায় নেমে নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন বলে সেই উড়ান বন্ধ রেখেছে রাজ্য। সম্প্রতি তারা জানিয়েছে, বিদেশে আটকে পড়া এই রাজ্যের বাসিন্দারা চাইলে নিজেদের উদ্যোগে বিমান ভাড়া করে কলকাতায় আসতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে নিয়ম না-মানলে দায়ী থাকবে সংশ্লিষ্ট উড়ান সংস্থা। কিন্তু বন্দে ভারত-এর উড়ান আসার ক্ষেত্রে রাজ্য সম্মতি দেয়নি। এমনকি, এখন অন্য দেশের উড়ান সংস্থাও যে এ ভাবে আটকে পড়া দুই দেশের নাগরিকদের নিয়ে যাতায়াত করছে, বন্ধ রয়েছে সেই উড়ানও।
উড়ান সংস্থা এবং ট্র্যাভেল এজেন্টদের দাবি, করোনাই যদি একমাত্র কারণ হয় তা হলে রাজ্য চাইলে এ বার কলকাতায় নামার পরে বিমানবন্দরেই প্রত্যেক যাত্রীর করোনা পরীক্ষা করা হবে। তা প্রযোজ্য হবে আন্তর্জাতিক এবং অন্তর্দেশীয়— উভয় ক্ষেত্রের যাত্রীদের উপরে। এই কারণে বিমানবন্দরে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার ব্যবস্থা করারও আর্জি জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। সেই পরীক্ষায় তৎক্ষণাৎ ফল পাওয়া যাবে। যাঁদের পরীক্ষা করে দেখা যাবে করোনা নেই, তাঁদের শহরে ঢুকতে দেওয়া হবে। সংক্রমিতদের পাঠানো হবে সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্র বা হাসপাতালে।
উড়ান সংস্থা এবং ট্র্যাভেল এজেন্ট চায়, বিমানবন্দরে রাজ্য সরকার এই অ্যান্টিজেন পরীক্ষার যন্ত্র বসাক। এই মুহূর্তে প্রতি দিন কলকাতায় গড়ে চার হাজার দেশীয় যাত্রী আসছেন। দিল্লি, মুম্বইয়ের উড়ান চালু হলে সংখ্যাটা ছ’হাজার ছাড়িয়ে যাবে। রোজ এত যাত্রীর অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা সম্ভব কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। উড়ান সংস্থাগুলিকে নিয়ে তৈরি ‘এয়ারলাইন্স অপারেটিং কমিটি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি এই পরীক্ষার ফল পাওয়া যায়। কেরলের বিমানবন্দরেও এই যন্ত্র বসিয়ে পরীক্ষা হচ্ছে।
‘ট্র্যাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’ (টাই)-র আর্জি, কলকাতায় নামার পরে কোনও যাত্রী ওই পরীক্ষা করাতে না-চাইলে তাঁকে ১৪ দিনের জন্য গৃহ-পর্যবেক্ষণে পাঠানো যেতে পারে। প্রয়োজনে সেই যাত্রীর সম্পর্কে স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনকেও জানানো যেতে পারে। তবে কোনও ব্যক্তি কলকাতায় নেমে সাত দিনের মধ্যে আবার অন্য শহরে উড়ে যেতে চাইলে তাঁকে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের গৃহ-পর্যবেক্ষণে না পাঠানোরও আর্জি জানানো হয়েছে। ‘টাই’-এর পূর্ব ভারতের চেয়ারম্যান মানব সোনি বলেন, ‘‘এই উড়ানগুলি বন্ধের জন্য ব্যবসা মার খাচ্ছে। দিনে অন্তত একটি করে সরাসরি দিল্লি, মুম্বইয়ের উড়ান চালু হলে সব দিক থেকে সুবিধা হবে।’’ আর ট্র্যাভেল এজেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া (টাফি)-র পূর্ব ভারতের চেয়ারম্যান অনিল পঞ্জাবির কথায়, ‘‘আমরা আশা করছি, রাজ্য সরকার আমাদের আর্জি মেনে নেবে।’’