কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল চিত্র।
স্থায়ী উপাচার্য তো নেই-ই, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শীর্ষ স্তরের অন্য বেশ কয়েকটি পদও শূন্য। এই অবস্থায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবাশিস দাসকে বীরভূমের বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন মাসের অস্থায়ী উপাচার্য করা হয়েছে। এই নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, দেবাশিসও অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্যের পদে যোগ দিতে চাইছেন না।
কয়েক মাস আগে আদালতের নির্দেশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য-পদ থেকে সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরে যেতে হয়েছে। ওই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) আশিস চট্টোপাধ্যায়। বছরখানেক ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্যের (অর্থ) পদটিও ফাঁকা। সেই দায়িত্বও সামলাচ্ছেন আশিস। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অফিসারের পদও কয়েক বছর ধরে ফাঁকা।
শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (কুটা) সভানেত্রী মহালয়া চট্টোপাধ্যায় ও সাধারণ সম্পাদক সনাতন চট্টোপাধ্যায় যৌথ বিবৃতিতে জানান, যখন উপাচার্য, সহ-উপাচার্যের (অর্থ) মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে পূর্ণ সময়ের জন্য কেউ নেই, তখন স্থায়ী রেজিস্ট্রারকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে অচলাবস্থা তৈরি করতে পারে। বিকল্প ব্যবস্থা না-করে এই ‘হঠকারী সিদ্ধান্ত রাজ্যের অদূরদর্শিতার পরিচায়ক’। অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থায়ী নিয়োগের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমপ্লয়িজ় অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ও দাবি জানান, অবিলম্বে স্থায়ী লোক এনে শূন্য পদ পূরণ করা হোক। সেই সঙ্গে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে পূরণ করা হোক সেনেট ও সিন্ডিকেটের সদস্যপদ।
এ দিকে, পূর্ব মেদিনীপুরের মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন মাসের জন্য অস্থায়ী উপাচার্য করা হয়েছিল সুব্রত দে-কে। তিনিই পূর্বতন উপাচার্য। সুব্রত অনুরোধ জানিয়েছেন, তাঁকে যেন আর উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া না-হয়। ইউজিসি-র নিয়ম, অধ্যাপক হিসেবে দশ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে উপাচার্য হওয়া যায়। অথচ অন্তত তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য-পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কলেজের এমন অধ্যক্ষদের, যাঁরা অধ্যাপক পদমর্যাদার নন। এই নিয়েও বিতর্ক চলছে।
বিকাশ ভবনের খবর, মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় এবং দার্জিলিং হিলস বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য পদের দায়িত্ব পেয়েছেন যথাক্রমে রূপকুমার বর্মণ এবং প্রেম পোদ্দার। রাজ্যের বাইরে থাকায় তাঁরা শুক্রবার পর্যন্ত নতুন দায়িত্ব নিতে পারেননি। রাজ্যে ফিরে দায়িত্ব নেবেন দু’জনেই। অন্যত্র দু’জন ওই দায়িত্ব নিতে চাইছেন না।