আদালত বিভিন্ন সময়ে প্রতারণায় অভিযুক্ত বেশ কয়েকটি অর্থ লগ্নি সংস্থার সম্পত্তি বিক্রি করে ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের টাকা ফিরিয়ে দিতে বলেছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা কার্যকর না-হওয়ায় টাকা ফেরানোর ব্যাপারে এ বার কেন্দ্র ও রাজ্যকে উদ্যোগী হতে হবে বলে দাবি তুলল ভুক্তভোগী এজেন্টদের সংগঠন।
১৯টি রাজ্যের বিভিন্ন অর্থ লগ্নি সংস্থার ক্ষতিগ্রস্ত এজেন্টদের দাবি, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার এ বার যৌথ ভাবে উদ্যোগী হয়ে আর্থিক কেলেঙ্কারির নেপথ্যে থাকা অর্থ লগ্নি সংস্থাগুলোর সম্পত্তি কিনে নিক। শুধু দুই সরকারের কাছে দাবি জানিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না এজেন্ট সংগঠন। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে এ বিষয়ে আবেদন জানাতে আজ, মঙ্গলবার কলকাতার পথে নামছেন ওই এজেন্টরা। এজেন্ট সুরক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক সুবীর দে জানান, দুপুর থেকে মিছিল এবং রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে অবস্থানের পরে তাঁরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে দরবার করবেন। দাবি না-মানলে অবস্থান চলবে।
বিভিন্ন বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থার বেশ কিছু কর্তা দীর্ঘদিন ধরে জেলে আছেন। কিন্তু তাঁদের অনেকেরই হোটেল, প্রমোদতরী বা রিসর্টের ব্যবসা চলছে রমরমিয়ে। হাইকোর্টের নির্দেশে এখনও পর্যন্ত ১৫টি লগ্নি সংস্থার সম্পত্তি বিক্রি করে ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের টাকা ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছে। তার জন্য প্রাক্তন বিচারপতি শৈলেন্দ্রপ্রসাদ তালুকদারের নেতৃত্বে একটি কমিটিও গড়ে দিয়েছে হাইকোর্ট। কিন্তু এজেন্ট সুরক্ষা মঞ্চের অভিযোগ, ওই সব লগ্নি সংস্থার সম্পত্তি বিক্রির কাজটাই ঠিক ভাবে করা হচ্ছে না। ফলে টাকা ফেরতের ক্ষেত্রেও টালবাহান চলছে।
এজেন্ট সংগঠনের দাবি, টাকা ফিরিয়ে দিতে কেন্দ্র ও রাজ্য একটা যৌথ কমিটি গড়ে তুলুক। অভিযুক্ত সংস্থাগুলির বাজেয়াপ্ত করার মতো সম্পত্তির ৭০ শতাংশ কেন্দ্র এবং বাকিটা রাজ্যই কিনে নিক। সেই সঙ্গে লগ্নি সংস্থার আর্থিক কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত সব মামলার শুনানি ত্বরান্বিত করার আর্জিও জানিয়েছেন এজেন্টরা। ঠিক এক বছর আগে হাইকোর্টের তরফে অর্থ লগ্নি সংস্থা মামলার শুনানির জন্য বিশেষ বেঞ্চ গড়া হয়। সোম-শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টে থেকে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে সেই শুনানি হওয়ার কথা। কিন্তু নানা কারণে শুনানি ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ এজেন্টদের। তাঁদের দাবি, এর পর থেকে সপ্তাহে তিন দিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত ওই মামলার শুনানি হোক।
বিভিন্ন বেসরকারি লগ্নি সংস্থার আর্থিক কেলেঙ্কারির জেরে যাঁরা আত্মহত্যা করেছেন, তাঁদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আর্জিও জানিয়েছে এজেন্ট সংগঠন। তাদের দাবি, অপবাদের জেরে যে-সব এজেন্ট এখনও ঘরছাড়া, তাঁদের নিরাপত্তা দিতে হবে।