ফাইল চিত্র।
সাসপেনশন প্রত্যাহার হতেই ধর্না তুলে নিলেন বিজেপি বিধায়করা। বৃহস্পতিবার বিধানসভার অন্দরে আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বিধায়কদের সাসপেনশন প্রত্যাহারের জন্য প্রস্তাব আনেন। সেই প্রস্তাবের পক্ষে অগ্নিমিত্রা পাশাপাশি পরিষদীয় মন্ত্রীর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও বক্তৃতা করেন। দু’তরফে বক্তৃতা শেষে বিজেপির সাত জন বিধায়কের সাসপেনশন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ঘোষণার সময় তিনি বলেন, "বিষয়টি নিয়ে অন্য কোথাও না গেলেই ভালো হত। বিধানসভার বিষয় বিধানসভায় আলোচনা করে মিটিয়ে নেওয়া গেলে এত বিলম্ব হত না।" তবে নিজের প্রস্তাবের সমর্থনে বলতে গিয়ে আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক বলেন, "বিধানসভার সদন কখনওই বিরোধী দল ছাড়া চলতে পারে না। আর এখানে তো বিরোধী দলনেতা ও বিরোধী দলের মুখ্য সচেতকেই সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছিল। তাই আমরা বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছিলাম।"
শাসক দলের তরফে সাসপেনশন প্রত্যাহার প্রসঙ্গে পার্থ বলেন, "বিধানসভা ও লোকসভা সবসময়ই বিরোধীদের জন্য। আমিও এক সময় এই সদনে বিরোধী দলনেতা ছিলাম। রাজ্যের বর্তমান বিরোধী দলনেতা সেই সময় আমাদের দলের সদস্য ছিলেন। তাই আমরা জানি বিরোধী দলের দায়িত্ব কী। আমি বিরোধী দলকে বলব বিধানসভা চালাতে বিরোধী দলের একটি দায়িত্ব রয়েছে। সেই দায়িত্ব যেন তারা পালন করে চলেন।" বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে যখন বিজেপি বিধায়কের সাসপেনশন প্রত্যাহার হয়, তখন ধর্নায় ছিলেন নাটাবাড়ি মিহির গোস্বামী ও মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিগগা। যিনি আবার বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক। সাসপেনশন প্রত্যাহারের পর মিহির জানিয়েছেন, বিরোধী দলনেতা সদনে এলেই তাঁরা অধিবেশনে প্রবেশ করবেন। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় আসেননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাই সাসপেনশন প্রত্যাহার হলেও ওই বিধায়করা অধিবেশনে যোগ দেননি।
প্রসঙ্গত, গত মার্চ মাসের ৮ তারিখে রাজ্যপাল জাগদীপ ধনখড় বিধানসভায় বাজেট বক্তৃতা দিতে এলে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়ক। সেই ঘটনার জেরে স্পিকার সাসপেন্ড করেন নাটাবাড়ি মিহির ও পুরুলিয়ার বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়কে। ২৮ মার্চ বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন তৃণমূল ও বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় বিরোধী দলনেতা ও মুখ্য সচেতক সহ আরো পাঁচ জন বিধায়ককে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সাসপেন্ড করে দেন স্পিকার। তারপর তাঁরা বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। কলকাতা হাইকোর্টের পরামর্শেই প্রথমে বিজেপি পরিষদীয় দলের তরফে সাসপেনশন প্রত্যাহারের প্রস্তাব আনা হয়। কিন্তু সেই প্রস্তাবে ত্রুটির কথা বলে তা বাতিল করে দেন স্পিকার। আবারও কলকাতা হাইকোর্ট বিষয়টি নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ করে মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন দু’পক্ষকে। কলকাতা হাইকোর্টের সেই পরামর্শ মেনে বৃহস্পতিবার বিজেপি পরিষদীয় দলের পক্ষ থেকে প্রস্তাব আনা হলে তা গ্রহণ করে সাসপেনশন প্রত্যাহার করেন স্পিকার।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।